বিনোদন প্রতিবেদক: ‘করোনার কারণে শুটিং স্থগিত করা হবে। ডিরেক্টরস গিল্ডের নেতা হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়াটা অনেক কঠিন ছিল। এটি একটি অনিশ্চিত পথের দিকে যাচ্ছিল। এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রুটিরুজি একেবারেই বন্ধ হওয়ার শঙ্কা ছিল। এর ভবিষ্যৎ কী, আমরা কেউ জানতাম না। কিন্তু মানবিক কারণে আমরা সবাই ঐকমত্য পোষণ করেছিলাম সেদিন।’ বললেন সালাহউদ্দিন লাভলু। ২০২০ সালের ২২ মার্চ, অর্থাৎ আজকের দিনে করোনা সতর্কতায় বন্ধ হয়েছিল সব শুটিং। গত দুই বছরে নাট্যাঙ্গন এগিয়েছে নাকি পিছিয়েছে, সেটাই অভিজ্ঞতার আলোকে বললেন এ অভিনেতা ও নির্মাতা।
বিধিনিষেধের কারণে এখন নাটকের সংখ্যা অনেক কমে গেছে বলে মনে করেন সালাহউদ্দিন লাভলু। একই সঙ্গে গত দুই বছরে নাটকের কনটেন্টে বেশ কিছু পরিবর্তন চোখে পড়েছে তাঁর। তিনি বলেন, ‘করোনার সময় থেকেই দেশের সব দর্শকদের কাছে ওটিটি আলাদাভাবে পরিচিতি লাভ করে। এ জন্য কাজের জায়গায় নির্মাতা ও লেখকদের চিন্তায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। ভালো বৈচিত্র্যময় নাটক আমরা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু ইউটিউবের নাটকের কারণে টেলিভিশনের নাটক তার জৌলুশ হারিয়েছে। পুরোনো চিন্তা, ধ্যানধারণার গল্প, বাজেট কম দিয়ে নাটক বানানোর কারণে দেশের প্রধান চরিত্রের অনেক অভিনেতা টিভির ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করতে চান না। এ কারণে টেলিভিশনের কাজের জন্য নির্মাতা ভালো কিছু করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।’
ইউটিউবভিত্তিক নাটকের বাজেট দ্বিগুণ বাড়লেও অনেক টেলিভিশনের নাটকের বাজেট একটুও বাড়েনি বলে জানান এই অভিনেতা ও নির্মাতা। এ সময়ে টেলিভিশন নাটক আরও পিছিয়েছে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘ওভারঅল টিভি নাটকের অবস্থা খুব একটা ভালো না। আমাদের নাটক নিয়ে ওপার বাংলার দর্শকদের আগ্রহ ছিল, সেই জায়গায় চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে নতুন করে ভাবতে হবে। কারণ, প্রতিটি টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল আছে। এখন তাদের দুই জায়গায় ব্যবসা, আয় বেশি। তারপরও কেন নাটকের বাজেট কমছে, বুঝি না।’
প্রতিবছর ঈদে ছয় থেকে সাতটি নাটক বানাতেন সালাহউদ্দিন লাভলু। কিন্তু এখন একটি বা দুটির বেশি নাটক বানানো সম্ভব হয় না তাঁর। এ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘গত কয়েক বছর সাত পর্ব করে আসছি। এখন চ্যানেলগুলো ভাবছে, সাত পর্ব না করে ২১টি এক ঘণ্টার নাটক করলে ভালো হয়। সেখানে ব্যবসা ভালো। এটা দরকার। কিন্তু ভালো বাজেট দিয়ে ভালো কাজও দরকার আছে। যে কারণে গত দুই বছরে অনেক নির্মাতার নিয়মিত কাজ নেই। হাতে গোনা কয়েকজন নির্মাতা ও শিল্পীকে নিয়ে এখনো কাজ হচ্ছে। নাটকে এ জায়গা থেকে আমরা বের হতে পারছি না। যে কারণে অনেক নির্মাতা এখনো বেকার। এসব সংকট থেকে বের হতে না পারলে আমরা এগোতে পারব না।’