আসাম নিউজ ডেস্ক: সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর উপস্থিতিতে একটি ডিমাসা সংগঠন, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের সাথে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম খবর বেরিয়েছে। এই চুক্তির বিশদ অবিলম্বে জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি নিয়ে এবার সরব হল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
এক প্রেস বার্তায় বিডিএফ মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন যে শোনা যাচ্ছে এই চুক্তি মাফিক অসমের কাছাড় ও লঙ্কা,হোজাই সংলগ্ন কিছু সীমান্তবর্তী গ্রাম নবগঠিত ডিমা হাসাও কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্ত হবে।
এ নিয়ে একটি বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রস্তাবিত এইসব গ্রামের বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তাই অবিলম্বে এই ব্যাপারে স্পষ্টীকরণ দিক সরকার। জয়দীপ আরো বলেন যে বিডিএফ তথা এই উপত্যকার বাঙালিরা চান যে উপত্যকার সমস্ত জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন হোক।
কারণ দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন উপজাতিদের সাথে এখানকার অনুপজাতিদের সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এ বিষয়ে কোন বিরোধ নেই।
কিন্তু জনসাধারণকে অন্ধকারে রেখে,স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদদের না জানিয়ে এই ধরনের চুক্তি করা অনুচিত ও সন্দেহজনক। তিনি বলেন এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাই ভিত্তিহীন মন্তব্য করছেন।
জেলাশাসক এক কথা বলছেন, বিধায়ক অন্য কথা বলছেন। এই প্রক্রিয়ার প্রাক্কালে ডিমাসা জনগোষ্ঠীর এক মন্ত্রী শিলচরে এসে গোপনে বৈঠক করে গেছেন। জয়দীপের প্রশ্ন এই ব্যাপারে এত গোপনীয়তা কেন ? তিনি বলেন এর থেকেই সন্দেহ হচ্ছে যে সরকার এই চুক্তির মাধ্যমে স্থানীয় ডিমাসা জনগোষ্ঠী এবং বাঙালিদের মধ্যে বিভেদের সূত্রপাত করাতে চাইছেন এবং বাঙালিদের শক্তি খাটো করতে চাইছেন।
তিনি বলেন বিনা আলোচনায় যদি বরাকের কিছু গ্রামকে ডিমা হাসাও এ অন্তর্ভুক্ত করা হয় তবে স্থানীয় বাংলাভাষীরা এর প্রতিবাদ জানাবেন এবং তাতে দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ও গন্ডগোলের সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিডিএফ এর সন্দেহ যে সরকার হয়তো সেটাই চাইছেন। তবে তিনি বলেন যে এই উপত্যকায় ডিমাসা ও বাঙালিদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। তাই এসব চক্রান্ত করে বিভাজন করা যাবেনা। বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক আরো বলেন যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে যেখানেই বাঙালিরা আছেন সেখানেই এই ধরনের ‘ ডিভাইড এন্ড রুল’ নীতি চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর আগেও ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণ নিয়ে একই চক্রান্ত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং রেল মন্ত্রকের সবুজ সংকেত থাকা সত্ত্বেও কোন এক অখ্যাত ডিমাসা সংগঠন থেকে প্রতিবাদ পত্র যোগাড় করে সেই অজুহাতে এই প্রক্রিয়া আটকে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন তারা জানেন যে এই উপত্যকার ডিমাসারা কখনোই এর বিরোধী নন । তারা জানেন যে ভাষা শহিদরা শুধু বাংলা নয় সমস্ত মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার্থে আত্মহুতি দিয়েছিলেন। এবং তাই সরকারের এসব অপচেষ্টাকে অগ্রাহ্য করে প্রতিবছর ১৯ শে মের অনুষ্ঠানে তাঁরা স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে থাকেন ।
জয়দীপ বলেন যে বিডিএফ এর পক্ষ থেকে তাঁরা অবিলম্বে সমগ্র ব্যাপারে সরকারের স্পষ্টীকরণ দাবি করছেন। অন্যথা ডিমাসা সহ সংশ্লিষ্ট সব গোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের সূচনা করতে বাধ্য হবে বিডিএফ । বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে।