ত্রিপুরা ডেস্ক: করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধিতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন আগামী ৩০ জানুয়ারি স্থগিত থাকবে। তাছাড়া, অষ্টম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ৫০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী একদিন অন্তর বিদ্যালয়ে উপস্থিতির অনুমতি দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে, অভিভাবকদের অনুমতি নিয়ে তবেই ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসতে পারবে। আজ সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন নিয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানালেন শিক্ষা মন্ত্রী রতন লাল নাথ। সাথে তিনি যোগ করেন, কলেজগুলিতে পূর্বের আদেশ ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। আগামী ২৯ জানুয়ারি সামগ্রিক বিষয় নিয়ে পর্যালোচনার পর পরবর্তী আদেশ জারি করা হবে, বলেন তিনি।
এদিন শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, করোনার প্রকোপের মাঝে স্কুল-কলেজ চালু রাখার বিষয়ে আজ শিক্ষা দফতরের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে স্বাস্থ্য দফতরও অংশ নিয়েছে। সামগ্রিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তাঁর কথায়, ইতিপূর্বে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত সমস্ত বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন স্থগিত রাখা হয়েছিল। কিন্ত, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রাক-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পঠন-পাঠন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে মোতাবেক শিক্ষা দফতর আদেশ জারি করেছে।
তিনি বলেন, ওই আদেশ আগামী সোমবার থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। আগামী ২৯ জানুয়ারি পুণরায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাঁর কথায়, অষ্টম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত এই মুহুর্তে পুরোদমে বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন স্থগিত করা হচ্ছে না। কারণ, বোর্ড পরীক্ষায় প্রস্তুতির ক্ষেত্রে অষ্টম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্রছাত্রীদের প্রতি নিয়ত বিদ্যালয়ে খুবই জরুরি। তাছাড়া, বিদ্যালয়গুলিতে বর্তমানে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ চলছে। বিদ্যালয়ে তাদের পঠন-পাঠন স্থগিত রাখা হলে টিকাকরণ প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটবে। স্বাস্থ্য দফতরও তাঁদের পঠন-পাঠন চালু রাখার পক্ষেই মত দিয়েছে। তাই, ৫০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী এক দিন অন্তর বিদ্যালয়ে উপস্থিতির ব্যবস্থা করার নির্দেশ জারি হয়েছে, বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, অষ্টম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতির ক্ষেত্রে অভিভাবকদের অনুমতি অবশ্যই জরুরি। অভিভাবকের সম্মতিপত্র ছাড়া ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে আসার জন্য অনুমতি দেওয়া হবে না। এদিন শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, প্রাক-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত বিদ্যালয় স্থগিত করা হলেও ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনায় ব্যাঘাত না ঘটুক সেদিকে খেয়াল রাখবে শিক্ষা দফতর। তাই, একটু খেল-একটু পড় প্রোগ্রাম পুণরায় চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাথে শিক্ষা দফতরের বন্দে ত্রিপুরা চ্যানেলেও প্রথম শ্রেণী থেকে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের পঠন-পাঠনে এসসিইআরটি বিশেষ খেয়াল রাখবে।
তিনি জানান, ত্রিপুরায় স্কুল ও কলেজের সমস্ত ছাত্রাবাস এখন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্ত, শিক্ষক-শিক্ষিকা কিংবা ছাত্রছাত্রী করনাক্রান্ত হলে অথবা শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে তাঁদের জন্য ছাত্রাবাসে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হবে। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয় এবং কলেজে যেখানে সম্ভব অনলাইনে পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা করা হবে। এদিন তিনি সাফ জানিয়েছেন, কলেজগুলির ক্ষেত্রে পূর্বের আদেশের সময়সীমা বর্ধিত করা হয়েছে। সাথে ছাত্রাবাস ও অনলাইনে পঠন-পাঠন নিয়ে নতুন আদেশ জারি করা হয়েছে। কলেজগুলির ক্ষেত্রেও আগামী ২৯ জানুয়ারি পুণরায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তাঁর দাবি, করোনার প্রকোপে ছাত্রছাত্রীদের ইতিমধ্যে প্রচুর লোকসান হয়েছে। কারণ, বিদ্যালয় বন্ধ থাকলে পঠন-পাঠনে ব্যাঘাত ঘটা খুবই স্বাভাবিক। তাই, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য উভয়দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, সমস্ত সরকারী, সরকার অনুদানপ্রাপ্ত, বেসরকারী এবং মাদ্রাসা স্কুলগুলির জন্য ওই আদেশ কার্যকর হবে। তেমনি, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সমস্ত কলেজ ও বেসরকারী কলেজগুলির ক্ষেত্রে ওই উচ্চ শিক্ষা দফতরের জারি করা আদেশ কার্যকর হবে।