- ৪ বছরে শীর্ষ ৫ ধনীর সম্পত্তি দ্বিগুণ, দরিদ্র হয়েছে ৫ বিলিয়ন
অর্থনীতি ডেস্ক: গত দশকে বিশ্বে বিলিয়নেয়ারদের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। দাতব্য সংস্থা অক্সফামের বার্ষিক প্রতিবেদনে ২ হাজার ১৫৩ জন বিলিয়নেয়ারের সম্পদের পরিমাণ বিশ্বের ৪৬০ কোটি বা ৬০ শতাংশ মানুষের সম্পদকে ছাড়িয়ে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তীব্র এ ধনবৈষম্যের সবচেয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দরিদ্র নারী ও কিশোরীদের ওপর। অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সমাজকে বাঁচিয়ে রাখতে তাদের অবদান সবচেয়ে বেশি। কিন্তু শিক্ষা, সন্তোষজনক আয় কিংবা সামাজিক ব্যাপারে তাদের মতামত গুরুত্ব পেয়েছে সবচেয়ে কম। এ বৈষম্যের ফলে আমাদের অর্থনীতি গোড়াতেই হোঁচট খাচ্ছে।
বিশ্বের শীর্ষ পাঁচজন ধনী ২০২০ সাল থেকে তাদের সম্পত্তি দ্বিগুণেরও বেশি করেছে। এই একই সময়ে বিশ্বে দরিদ্র হয়েছে প্রায় ৫ বিলিয়ন মানুষ।
সোমবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ব্যবসায়িক অভিজাতদের বার্ষিক সমাবেশ থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী অক্সফাম এ তথ্য জানিয়েছে।
সোমবার অক্সফাম প্রকাশিত ‘ইনইকুয়ালিটি ইনকর্পোরেটেড’ রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত চার বছরে প্রতি ঘণ্টায় ১৪ মিলিয়ন ডলারের হারে তাদের সম্পদ বৃদ্ধির পর এই পাঁচজন ব্যক্তির সম্পদের সম্মিলিত মূল্য দাঁড়িয়েছে ৮৬৯ বিলিয়ন ডলারে (১ বিলিয়ন = ১০০ কোটি)।
এই পাঁচ ব্যক্তি হলেন- এলভিএমএইচ -এর প্রধান বার্নার্ড আর্নল্ট, অ্যামাজনের জেফ বেজোস, বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট, ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন ও টেসলার সিইও ইলন মাস্ক।
অক্সফাম বলেছে, এই পাঁচ ব্যক্তির সম্পত্তি দ্বিগুণ বৃদ্ধি সত্ত্বেও একই সময়ে দরিদ্র হয়েছে ৫ বিলিয়ন (৫০০ কোটি) মানুষ।
দারিদ্র্য বিরোধী গোষ্ঠী অনুসারে, যদি বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলে এক দশকের মধ্যে বিশ্বের প্রথম ট্রিলিওনিয়ার (১ লাখ কোটি) হবে কিন্তু ২২৯ বছরের মধ্যে দারিদ্র্য নির্মূল হবে না।
অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাহী পরিচালক অমিতাভ বেহার বলেছেন, কারো কাছে এক বিলিয়ন ডলার থাকা উচিত নয়।
এছাড়া ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, বিনিয়োগের কঠোর শর্ত ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাজনিত (এআই) নেতিবাচক প্রভাবের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য আরেকটি অনিশ্চয়তার বছর হতে যাচ্ছে ২০২৪ সাল।
এ পরিস্থিতিতে বিশ্বের সরকারগুলোকে ধনবৈষম্য কমাতে সহায়ক নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান জানিয়েছে অক্সফাম। এজন্য আগামী দশকজুড়ে শীর্ষ ধনীদের ওপর দশমিক ৫ শতাংশ কর বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে। শীর্ষ ধনীদের ১ শতাংশ আগামী এক দশকজুড়ে এ হারে অতিরিক্ত কর দিলে প্রবীণ ও শিশু পরিপালন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে আগামী ১০ বছরে ১১ কোটি ৭০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার মতো অর্থ জোগাড় করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।