নিজস্ব প্রতিনিধি: ঠিক যেন অলিম্পিক চলছে। প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন রেকর্ড। প্রতিদিন ভেঙেচুরে ইতিহাস হয়ে যাচ্ছে পুরানো সব রেকর্ড। খালি দুঃখ এটাই যে এটা সেই মহান ক্রীড়া প্রতিযোগীতা নয়। নয় সেই, ‘দ্যা গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’। এ বড়ই কঠিন এক লড়াই যেখানে শত্রুর অস্তিত্ব আছে সর্বত্র অথচ সে নিজে অদৃশ্য। এক আধটাও নয়। এক একজনের শরীরে হয়তো বাসা বেঁধে কিলবিল করছে শো-দেড়শো শত্রু। সেই মানুষটার শরীরে যেমন তাঁর অজান্তেই সে বাসা বেঁধেছিল এবার তাঁর শরীর থেকে তাঁরই অজান্তে অন্য মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে সেই অদৃশ্য শত্রু। যেন সাসপেন্সে ভরা হলিউডের কোনও রুদ্ধশ্বাস সিনেমা। ফারাক এটাই যে পর্দার দেখা দৃশ্য বাস্তব নয়। আর এটা এমনই এক বাস্তব যেখানে প্রতিদিন প্রতিমুহুর্ত মৃত্যু এসে স্পর্শ করে যায়। এই যেমন গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা ৫২। আবার রেকর্ড গড়ে দিল একদিনে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যাও। শেষ ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯১২জন। অর্থাত্ ৩ হাজার ছুঁই ছুঁই। হ্যাঁ এটাই সেই অদৃশ্য শত্রুর দাপটা। নাম তার কোভিড-১৯।
শুক্রবার রাজ্য সরকার যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে তাতে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে পৌঁছেছে ৮৯ হাজার ৬৬৬জন। অর্থাত্ হাতে গোনা আর দিন দুই তিনের মধ্যেই এক লক্ষ পার হয়ে যাবে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা। একই সঙ্গে হয়তো আগামীকালই দেখা যাবে রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার পার হয়ে গিয়েছে। তবে আশা এটাই যে সুস্থতার সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। রাজ্যে এখন মোট ডিসচার্জের সংখ্যা ৬৩ হাজার ০৬০জন। রাজ্যে মোট মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে পৌঁছেছে ১ হাজার ৯৫৪জন। অর্থাত্ মোট সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা ৬১, ১০৬জন। এর মধ্যে শেষ ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ হাজার ৯৮৫ জন। এই হিসাবে রাজ্যে এখন সক্রিয় কোভিড আক্রান্ত রয়েছেন ২৪ হাজার ৬৫২জন। সুস্থ হয়ে ওঠার শতকরা হার ৭০.৩৩ শতাংশ। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে কোভিড টেস্ট হয়েছে ১০ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫০৯টি। এর মধ্যে শতকরা ৮.৫ শতাংশ কেস পজিটিভ আসছে।
৬ আগস্ট পর্যন্ত পাওয়া জেলাওয়াড়ি তথ্যের হিসাবে এখনও সব থেকে খারাপ অবস্থা কলকাতারই। শেষ ২৪ ঘন্টায় এই শহরে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭৫জন। ডিসচার্জ হয়েছেন ৫৯৭জন। মারা গিয়েছেন ২০জন। সেই হিসাবে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৭৭জন আর নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৫৮জন। সব মিলিয়ে শহরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে পৌঁছেছে ২৬ হাজার ৫৫৭জন, ডিসচার্জ হয়েছেন ১৮ হাজার ৭০৬জন, মারা গিয়েছেন ৯০৭জন, সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৭ হাজার ৭৯৯জন আর সক্রিয় কেস রয়েছে ৬ হাজার ৯৪৪টি। এর ঠিক পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৩১৪জন, ডিসচার্জ হয়েছেন ১৩ হাজার ২৫৯, মারা গিয়েছেন ৪৪৪জন, সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১২ হাজার ৮১৫জন। সক্রিয় কেস রয়েছে ৫৬১১টি। এরপরেই রয়েছে হাওড়া। সেখানে এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৩৩৩জন। ডিসচার্জ হয়েছেন ৬ হাজার ৯৫৫জন, মারা গিয়েছেন ২৪০জন, সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬ হাজার ৭১৫জন। জেলায় সক্রিয় কেস রয়েছে ২ হাজার ১৩৮টি। চতুর্থ স্থানেই রয়েছে দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলা। সেখানে এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৪৫৬জন। মোট ডিসচার্জ ৪ হাজার ৭৮০জন, মারা গিয়েছেন ১১০জন, সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪ হাজার ৬৭০জন। জেলায় সক্রিয় কেস রয়েছে ১ হাজার ৫৬৬টি। পঞ্চম স্থানে রয়েছে হুগলি জেলা। সেখানে এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৩০৩জন। ডিসচার্জ হয়েছেন ৩ হাজার ১১৩জন, মারা গিয়েছেন ৬৭জন, সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ হাজার ৪৬জন। জেলায় সক্রিয় কেস রয়েছে ১ হাজার ১২৩টি।