বাংলাদেশ ডেস্ক: মুক্তিযুদ্ধে নদীর ভূমিকা অত্যন্ত শক্তিশালী। নদী যেমন স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে ধারণ করেছে, তেমনি পাকিস্তানি বাহিনীর পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। তাই নদীভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে নদীকে মুক্তিযোদ্ধা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন নদী গবেষকেরা।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ‘মুক্তিযুদ্ধে নদী ও নদীর গান’ শীর্ষক সভায় আলোচকেরা এ দাবি জানান। রিভার বাংলা ও রিভার অ্যান্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ গবেষক সত্যজিৎ রায় মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের যদি উল্লেখযোগ্য ৫০০টি অপারেশনের কথা বলা হয়, তার মধ্যে ৪০০ টির বেশি ছিল নদীকেন্দ্রিক অপারেশন। নদীভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের কথা যখন বলব, তাহলে ৪০০ নদী এখন কোথায়। আজকে নদীগুলো হারিয়ে যাচ্ছে, হারিয়ে যাচ্ছে নদীকেন্দ্রিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।’
নদীকে মুক্তিযোদ্ধা ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে নদী গবেষক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা যেমন বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, নদীও তাতে ভূমিকা রেখেছ। দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। তাই আমরা নদীকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণার দাবি জানাই। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানলে আমরা নদীকে জানব। উচ্চ আদালত নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষণা করেছে। নদী যদি জীবন্ত সত্তা হতে পারে, তাহলে মুক্তিযোদ্ধাও হতে পারে। তাহলে হত্যা করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা স্মরণ করতে আমরা স্মৃতিসৌধ তৈরি করি, কিন্তু নদীর ইতিহাস রক্ষায় কোনো স্মৃতির মিনার নেই।’
অনুষ্ঠানে বাউল গান পরিবেশন করেন বাউল ভজন ক্ষ্যাপা ও তার দল। আয়োজনের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধে নদীর অবদান নিয়ে তথ্যভিত্তিক পরিসংখ্যান নিয়ে ডিজিটাল প্রদর্শনী হয়।
রিভার বাংলা’র সমন্বয়ক ও লেখক ফয়সাল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বীরপ্রতীক শাহজাহান কবির, নৌ কমান্ডো ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, নদী গবেষক জাকারিয়া মণ্ডল, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি ইবনুল সাঈদ রানা, নোঙর সভাপতি সুমন সামস্, গ্রিন সেভার্সের প্রতিষ্ঠাতা আহসান রনি, মুক্তিযোদ্ধা সামসুল আলম জুলফিকার, কথাশিল্পী মনি হায়দার, কবি সঞ্জয় ঘোষ, গল্পকার ও সাংবাদিক সাইফ বরকতুল্লাহ প্রমুখ।