২০১০ সালের ২৫ জুন রাজধানীর রমনা-শাহবাগ এলাকা থেকে নিখোঁজ হোন বিএনপির ঢাকা মহানগরের নেতা ও অভিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চৌধুরী আলম নিখোঁজ হোন। এখনও তিনি ফিরে আসেননি। তার জন্য পথ চেয়ে আছেন মেয়ে মাহফুজা আক্তার, মা ও স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু তাদের অপেক্ষা ১০ বছরেও শেষ হয়নি।
শুধু চৌধুরী আলম নয়, গত ১৪ বছরে ৬০৪ জনকে গুম করা হয়েছে। তাদের কেউই ফিরে আসেনি। তাদের ফিরে আসার অপেক্ষায় পরিবারগুলো। কিন্তু তাদের অপেক্ষা আজও শেষ হয়নি, তবে তাদের অপেক্ষা শেষ হবে- তা কেউ বলতে পারছে না।
আন্তর্জাতিক গুম বা বলপূর্বক অন্তর্ধান প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে দেয়া আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য মতে, ২০০৭ থেকে ২০২০ (২৫ আগস্ট) পর্যন্ত ৬০৪ জন গুমের শিকার হয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনরা অভিযোগ তুলেছেন। এদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে ৭৮ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। ৮৯ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং ৫৭ জন ফেরত এসেছে। অন্যদের বিষয়ে সুর্নিদিষ্ট তথ্য গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়নি।
গুমের শিকার সব নিখোঁজ ব্যক্তিকে অবিলম্বে খুঁজে বের করা, প্রতিটি গুমের অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিতে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠন, দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গুমের শিকার ব্যক্তি ও তার পরিবারের যথাযথ পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
আর মানবাধিকার সংস্থা এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের হিসাবে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে গুমের শিকার হয়েছেন ৫৫৩ জন। তাঁদের কেউ কেউ ফিরে এসেছেন। কেউ উদ্ধার হয়েছেন সীমান্তের ওপার থেকে। কারও লাশ পাওয়া গেছে পরে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ তুলছে। যাঁরা এখনো নিখোঁজ, তাঁদের পরিবারের বিপদ অন্য রকম। সেটি হলো নিখোঁজ ব্যক্তির নামে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমানো টাকা তুলতে না পারা এবং সম্পদও বুঝে না পাওয়া।