আবু সাঈদ, পর্তুগাল: পর্তুগালের আলেন্টেজো অঞ্চল খ্যাত ভিলা নোভা ডি মিলফন্টেসে জাঁকজমকপূর্ণভাবে ঈদ উদযাপন করেছে প্রবাসী বাঙালিরা। বাংলাদেশ কমিউনিটি অব মিলফন্টেসের উদ্যোগে সোমবার সকাল ৮টায় স্থানীয় একটি ফুটবল মাঠে ঈদুল ফিতরের নামাজের আয়োজন করা হয়।
জামাতে অংশ নেয় প্রবাসী বাঙালি, পেশাজীবী, ব্যবসায়ীসহ কমিউনিটির নেতারা। প্রবাসী বাঙালিদের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫০০শ এর বেশি মুসল্লি ঈদের জামাতে অংশ নেয়।
ঈদ উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ কমিউনিটি অব মিলফন্টেসের সভাপতি মো. ইয়াকুব খানের উপস্থিতিতে সভাপতিত্ব করেন সাধারণ সম্পাদক সুমন খান। ঈদের নামাজ পরিচালনা করেন অস্থায়ী ইমাম জুনাইদ হুসাইন।
স্বাগত বক্তব্যে সুমন খান ঈদের নামাজ আয়োজনে সহযোগিতা করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনসহ উপস্থিত মুসল্লিদের ধন্যবাদ জানান। এসময় মিলফন্টেসে খুব দ্রুত সময়ে মসজিদে নির্মাণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।
তরুণ উদ্যোক্তা আরিফ হুসাইন রিগান জানান, পবিত্র ঈদের নামাজ আদায়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অল্পকিছু স্বাস্থ্য বিধিনিষেধ আরোপ করে সালাত আদায়ের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন জুন্তা ফ্রেগজিয়ার বিধিনিষেধগুলো ছিলো- মাস্ক পরিধান করা, প্রত্যেক মুসল্লির বাসা থেকে ওজু করে আসা, নিজস্ব জায়নামাজ ব্যবহার করা ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করা।
তিনি জানান, মহামারি করোনাভাইরাসের আগে মিলফন্টেসে অধিকসংখ্যক মুসল্লিদের অংশগ্রহণে দুই ঈদের সালাত আদায় করা হতো। সেখানে অংশগ্রহণ করতো বাংলাদেশি অভিবাসী মুসলমানসহ অন্যান্য মুসলিম প্রধান দেশের হাজার হাজার মুসল্লি।
মহামারিকালীন স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় স্থানীয় প্রশাসন থেকে নামাজ আদায়ের অনুমতি দেওয়া হলেও তাতে বেধে দেওয়া হয় কঠোর বিধিনিষেধ। এ বছর করোনাভাইরাসসহ নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রাদুর্ভাব কিছুটা কম থাকায় নামমাত্র কিছু শর্তে জুন্তা ফ্রেগজিয়া বাংলাদেশিদের ঈদের সালাত আদায়ে অনুমতি দেওয়া হয়। আগের মতো এ বছরও উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই একসঙ্গে জামাতে অংশগ্রহণ করতে পেরে আনন্দিত অনুভব করছি।
নামাজ শেষে দেশ, জাতি, অভিবাসী ও প্রবাসী মুসলমানদের সুস্বাস্থ্য কামনায় দোয়া মোনাজাত করা হয়। তাছাড়াও অভিবাসীদের পিতামাতাসহ তাদের স্বজনদের মধ্যে যারা কবরবাসী হয়েছেন তাদের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত করা হয়।
ভিলা নোভা ডি মিলফন্টেস পর্তুগালের রাজধানী লিসবন থেকে প্রায় ১৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি শহর। প্রধানত, কৃষি অঞ্চলের আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল আলেন্টজো বা রুপক অর্থে কৃষির স্বর্ণ খনীয় অঞ্চল হিসেবে খ্যাত। তাই সেখানে কৃষি পেশার সঙ্গে সংযুক্ত শ্রমজীবী, পেশাজীবী ও ব্যবসায়ীদের বসবাস ও কাজকর্ম দিন দিন বেড়েই চলেছে।
কৃষিতে সম্ভাবনাময় এই অঞ্চলকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন তরুন উদ্যোক্তা। বসবাসরত অভিবাসীদের বেশিরভাগই মুসলমান, সেখানে মুসলমানদের ইবাদতের জন্য এখনো পর্যন্ত কোনো মসজিদ প্রতিষ্ঠা না হলেও তার জন্য সেখানের কমিউনিটির ব্যক্তিত্বরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।