- মমতার বিদেশ সফর নিয়ে শুভেন্দুর বিস্ফোরক মন্তব্য
পশ্চিমবঙ্গ নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজ্য সরকারের তরফে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে মন্ত্রিসভার এ রদবদলের কথা জানানো হয়েছে।
এর পাশাপাশি রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্নে সংবাদ সম্মেলন করেও এ রদবদলের ঘোষণা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
দায়িত্ব বাড়লো জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, প্রদীপ মজুমদার ও গায়ক ইন্দ্রনীল সেনের। পাশাপাশি ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে গায়ক বাবুল সুপ্রিয়ের। যদিও নতুন কোনো মুখকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
বাবুল সুপ্রিয়কে পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে অচিরাচরিত শক্তি উৎস দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আগের মতো তথ্যপ্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন দপ্তরের দায়িত্বও বাবুল সুপ্রিয়র হাতে থাকছে।
পর্যটন দপ্তর ফিরল পুরোনো মন্ত্রীর কাছেই। মাস খানেক আগেই ইন্দ্রনীল সেনকে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তাকে ফের পর্যটন দপ্তরের দায়িত্ব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ইন্দ্রনীলকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলাতে হবে তথ্য ও সংস্কৃতি এবং কারিগরি শিক্ষা।
এছাড়া এতদিন গোলাম রব্বানির হাতে ছিল খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তর। সেই দপ্তর তার কাছ থেকে সরিয়ে অরূপ রায়কে দেওয়া হয়েছে। রব্বানির হাতে পরিবেশ দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
রদবদলে তাৎপর্যপূর্ণভাবেই গুরুত্ব বেড়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের। তাকে সমবায় দপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এতদিন সমবায় দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন হাওড়া জেলার প্রবীণ নেতা অরূপ রায়। তাকে সমবায় দপ্তর থেকে সরিয়ে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অরূপ রায়কে দেওয়া হয়েছে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দপ্তর।
দায়িত্ব বেড়েছে বনদপ্তরের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। বনদপ্তরের পাশাপাশি তাকে শিল্প পুনর্গঠন দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মমতার বিদেশ সফর নিয়ে শুভেন্দুর বিস্ফোরক মন্তব্য
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদেশ সফর নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন, দুবাইতে কিছু আইন আছে, যেখানে বেআইনি টাকা সাইফন করা যায়।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে হাওলার মাধ্যমে যে টাকা তার (মমতা) পরিবার সরাচ্ছে, সেই টাকাকে সুরক্ষিত করার জন্য ওনার এই সফর। ওনার আগে ভাইপো (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়), ভাইপোর স্ত্রী এবং ভাইপোর শ্যালিকা সেখানে গেছেন। প্ল্যান রেডি করা আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসবের সাক্ষী। অতএব স্পেন যাওয়া ওনার মূল উদ্দেশ্য নয়, তিনি দুবাইকে ট্রানজিট পয়েন্ট করেছেন।
মূলত, ১১ দিনের সফরে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টম্বর) সকালে স্পেনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে তিনি যাবেন দুবাইয়ে। দুবাই থেকে যাবেন স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে। সেখান থেকে তিনি যাবেন বার্সেলোনায়।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধিদলে রয়েছেন ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান ক্লাবের একজন করে প্রতিনিধি। সঙ্গে আছেন সাংবাদিক প্রতিনিধিরা। সেখানে লন্ডন থেকে এসে যোগ দেবেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী দুবাইতে এক শিল্প বৈঠকে যোগ দেবেন। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন মমতা।
বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, পাঁচ বছর পরে আমরা যাচ্ছি। স্পেন আমাদের বইমেলায় এসেছিল। আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় তারা পার্টনার (থিম কান্ট্রি) ছিল। ওখানে ম্যানুফ্যাকচারিং এবং অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রি ভালো আছে। তাদের আমন্ত্রণে আমরা যাচ্ছি। সুতরাং দেখা যাক কী কী হতে পারে।
তিনি আরও বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর বিজনেস সম্মেলন আছে। ওরা (স্পেন) প্রতিবার আসে। কিন্তু, আমরা কেউ যাই না। তা ছাড়া দুবাইতেও একটা বিজনেস সামিট রয়েছে। স্পেনে ফুটবল নিয়েও আলোচনা হবে। আর একটা প্রবাসীদের মিটিং আছে। সময়ে সময়ে সব জানিয়ে দেব।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই সফরে সামিল হয়েছেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। মুখ্যমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে ছাড়তে আসেন ডায়মন্ড হারবার সাংসদ তথা তার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেকের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গেছে, মাদ্রিদে লা লিগার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের তাবাসের সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। লা লিগার সঙ্গে কলকাতার ক্লাবগুলির একটা এমওইউ স্বাক্ষরিত হতে পারে এই সফরে।
প্লেনে ওঠার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে বিশ্ববাংলার স্টলের দুর্গার একটি মাটির মূর্তিতে মমতাকে রং করতেও দেখা যায়। দুর্গামূর্তির কপালে লাল রং দিয়ে ত্রিনয়ন আঁকেন। পরে প্রতিমার ঠোঁটেও বুলিয়ে দেন একই রং। শুধু দুর্গামূর্তি রং করা নয়, বিশ্ববাংলার গোটা স্টল ঘুরে ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। শাড়ি এবং অন্যান্য জামাকাপড়ের সংগ্রহ দেখেন। স্টলে রাখা একটি শঙ্খ হাতে তুলে নিয়ে তাতে ফুঁ দিতেও দেখা যায় তাকে।