পশ্চিমবঙ্গ নিউজ ডেস্ক: রাজভবনের সামনে ধর্নায় না বসে থেকে তৃণমূলের নেতাদের বিজেপির পার্টি অফিসে এসে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। ‘সব ব্যবস্থা করে দেবেন’ বলেও সাত সকালে উপযাচক হয়ে শাসকদলকে বার্তা দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিকেলে ধর্না মঞ্চ থেকে সেই সুকান্ত মজুমদারের মোবাইলে ফোন করে পাওনা টাকার বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে ফোন করে কেউ যেন গালিগালাজ না করেন, বারংবার সেই অনুরোধও জানিয়েছেন অভিষেক। অভিষেকের কথায়, ‘‘ওঁকে সকলে ফোন করুন। ভদ্র ভাবে বলুন টাকা আনিয়ে দেওয়ার কথা। বার বার বলছি, ফোন করে ভদ্র ভাবে কথা বলুন।’’
ফোন করে কী বলতে হবে, তাও জানিয়েছেন অভিষেক। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, “‘আপনারা সকলে এই নম্বরে ফোন করে বলুন, আপনার এত ক্ষমতা, আপনি বললেই টাকা চলে আসবে। তাহলে আপনি দয়া করে আমাদের টাকাটা আনিয়ে দিন। দু’বছর ধরে আমাদের বেতন আটকে আছে।’’
এরপরই অভিষেকের নির্দেশ মেনে ধর্না মঞ্চ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দুটি মোবাইন নম্বর বঞ্চিতদের দিয়ে দেন দলের রাজ্য নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সুকান্ত মজুমদার আর শুভেন্দু অধিকারীর একটা ফোন কথোপকথন এর রেকর্ড শোনান অভিষেক, যেখানে টাকা আটকে রাখার কথা বলা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর এদিনের কলকাতা সফর প্রসঙ্গে সাত সকালে তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশে সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, তৃণমূলের প্রতিনিধি দল চাইলে তিনি বিজেপি অফিসে মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেবেন! রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, কটাক্ষের জবাবে সুকান্তর মোবাইল নম্বরে সকল বঞ্চিতকে ফোন করার পরামর্শ দিয়ে আদতে বিজেপির বিড়ম্বনা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করলেন অভিষেক।
একই সঙ্গে চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির। শনিবার কলকাতায় এসে সাংবাদিক বৈঠক থেকে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি জানিয়েছিলেন, “যেখানে বলবেন সেখানে দেখা করতে রাজি!” তারই জবাবে অভিষেক বলেন, “আমরা যেখানে বসে আন্দোলন করছি, এখান থেকে আড়াই মিনিট দূরে রাজভবন। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী চাইলে রাজভবনে বা কোনও সরকারি জায়গায় আসুন। আমরা আলোচনায় বসতে রাজি।”
৩ অক্টোবর কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের। অভিযোগ, দেড় ঘণ্টা বসিয়ে রেখেও দেখা না করে পালিয়ে যান সাধ্বী নিরঞ্জন। প্রতিবাদে কৃষি ভবনের সামনেই বিক্ষোভে বসেন অভিষেকেরা। বিক্ষোভ হঠাতে তাঁদের চ্যাংদোলা করে প্রিজন ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। তারই জেরে ৫ অক্টোবর থেকে রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসেছে তৃণমূল।
শুক্রবার ধর্না কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে শীর্ষ আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যপালকে। আর শনিবার সুদূর কলকাতা থেকে বংলায় উড়ে এলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অভিষেকের কঠাক্ষ, “৯৬ ঘণ্টাও হয়নি। তার আগেই বাংলায় এসে মাথা নত করতে হল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে। এটাই হল বাংলা, এটাই বাংলার মানুষের ক্ষমতা!” সূত্র: দ্য ওয়াল ব্যুরো