কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ: এবার পশ্চিমবঙ্গের পুরনিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়িতে হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। একই সঙ্গে অভিযান চলছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়ের ফ্ল্যাট এবং উত্তর দমদম পুরসভার সাবেক পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তীর বাসভবনে।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) ভোরে দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর সল্টলেক শ্রীভূমির দুটি বাড়িতে তল্লাশি শুরু করেন ইডির গোয়েন্দারা। বাড়তি তৎপরতা হিসেবে পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরা। এই মুহূর্তে মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জানা যায়, পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তেই মন্ত্রীর বাড়িতে তদন্ত চালাচ্ছে ইডি।
শুধু সুজিত বসু নয়, এদিন একই মামলায় সকাল থেকে বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়ের কলকাতার বউবাজারের ফ্ল্যাট এবং উত্তর দমদম পুরসভার সাবেক পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতেও হানা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কর্মকর্তারা। নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তাপস ও সুবোধের বিরুদ্ধে। বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মন্ত্রী সুজিত ও শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে।
এর জেরে ভারতের লোকসভার ভোটের আগে উত্তপ্ত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। একের পরপর দুর্নীতি মামলায় জেরবার রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তল্লাশিতে আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বাংলা। আদালতের নির্দেশে তদন্ত জোরালো করেছে ইডি, সিবিআইয়ের মত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলো। তৃণমূলের নেতারা মনে করছেন, বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের মদতেই রাজ্যকে অশান্ত করে তুলছে সংস্থাগুলো।
জানা গেছে, তদন্তে অসহেযোগিতা করলে গ্রেপ্তার হতে পারেন তিনজন। ফলে সেখানে যেন বিশৃঙ্খলা না তৈরি হয়, সে কারণে বিশাল সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশ মোতায়েন করছে ইডি। রয়েছেন নারী সদস্যরাও।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে শাসকদলের অনুসারীদের হাতে রক্তাত হতে হয় ইডির গোয়েন্দাদের।
সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় জেল হেফাজতে রয়েছেন তিনি। সেই সূত্র ধরে, শাহজাহানের বাড়িতে ইডি হানা দিলে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের হাতে রক্তাক্ত হন ইডির কর্মকর্তারা।
এরপরই দিল্লি থেকে কলকাতায় ছুটে আসেন ইডির প্রধান। অপরদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এ ঘটনার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে কৈফিয়ত চান।