কলকাতা প্রতিনিধি: পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্তে আরও পাঁচটি সীমান্ত হাট চালু হতে পারে। এই সীমান্ত হাট চালু করার বিষয়ে উভয় দেশ সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বৃহস্পতিবার কলকাতায় ভারত চেম্বার অব কমার্সের এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সীমান্ত হাট চালু নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।
নতুন সীমান্ত হাটগুলো চালু হবে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্তে। এর মধ্যে প্রথম হাটটি চালু হতে পারে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সোনামসজিদ ও পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার মহদীপুর সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকায়। অন্য চারটি সীমান্ত হাট বসতে পারে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাট জেলার ঘোজাডাঙ্গা ও বাংলাদেশের সাতক্ষীরা সীমান্তের ভোমরা; পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার পেট্রাপোল ও বাংলাদেশের যশোরের বেনাপোল; পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গেদে ও বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গার দর্শনা এবং ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর ও বাংলাদেশের হিলি সীমান্তে।
বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি কলকাতার বিশ্ববঙ্গ সম্মেলনে যোগ দিতে এসে গত মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি পাঁচটি সীমান্ত হাট নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানান, দুই দেশই এ ব্যাপারে সম্মত। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর (সিএম) সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। সিএম তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার ও বাংলাদেশের লালমনিরহাট সীমান্তে হাট চালুর ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন।
সম্প্রতি দিল্লির একটি সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশ সরকার এবার পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার জিরো পয়েন্টে পাঁচটি সীমান্ত হাট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এসব সীমান্ত হাট চালু করতে উভয় দেশ সম্মত হয়েছে। ওই খবরে বলা হয়, এ ব্যাপারে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে কথা হয়েছে। প্রথমে পরীক্ষামূলক প্রকল্প হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার মহদীপুর ও বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সোনামসজিদ সীমান্তে হাট চালু করা হবে। এই হাট নির্মাণের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সবুজসংকেত দিয়েছেন।
এর আগে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয় ও ত্রিপুরার বাংলাদেশ সীমান্তে এ ধরনের চারটি হাট চালু করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল, সীমান্তের বাসিন্দাদের উৎপাদিত পণ্য যাতে উভয় দেশের সীমান্ত এলাকার মানুষ কেনাবেচা করে আর্থিকভাবে লাভবান হন।
২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল মেঘালয়-বাংলাদেশ সীমান্তের কালীচরণ, বালাটে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে এবং ত্রিপুরার শ্রীনগর ও কমলাসাগর সীমান্তে এসব হাট চালু করা হয়। এর ফলে দুই দেশের সীমান্ত এলাকার মানুষ তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করার সুযোগ পেয়ে আসছেন। তখন থেকেই বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তেও এ ধরনের হাট চালুর দাবি ওঠে।
এসব হাটে মূলত দুই দেশের সীমান্ত এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত সবজিসহ খাদ্যশস্য, মিষ্টি, মাছ, মাংস, ডিম, প্লাস্টিকজাত নানা সামগ্রী কেনাবেচা হবে। উভয় দেশের সীমান্ত এলাকার পাঁচ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বসবাসকারী বাসিন্দারা এই হাটে তাঁদের পণ্য কেনাবেচা করতে পারবেন। অনেকেই মনে করছেন, এই হাট চালু হলে সীমান্তে অবৈধ চোরাচালান বন্ধ হয়ে যাবে। বিশেষ করে সীমান্তের গরু পাচারে লাগাম টানা যাবে। তবে এই হাট শুরুর দিকে সপ্তাহে এক দিন খোলা থাকবে। তবে সীমান্তের লোকজন সপ্তাহে অন্তত তিন দিন হাট চালু দেখতে চান।