বিভিন্ন মহলের সমালোচনার জেরে বিহারের ভোটে পোস্টাল ব্যালট নিয়ে আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল নির্বাচন কমিশন। চলতি বছরের শেষের দিকে বিহারের বিধানসভা নির্বাচন এবং কয়েকটি উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই সমস্ত ভোটে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বের ভোটারদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে এই মাসের শুরুতেই সুপারিশ করেছিল কমিশন। কিন্তু বৃহস্পতিবার নির্বাচন সদন থেকে জানানো হয়েছে,আপাতত এই প্রস্তাব কার্যকর হচ্ছে না। ‘লজিস্টিক, লোকবল এবং কোভিড-১৯ সুরক্ষা প্রোটোকলের কারণে’ এই প্রস্তাব কার্যকর হচ্ছে না বলে কমিশন এদিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
এখনও ৮০ বছরের বেশি বয়সী ভোটার, জরুরি পরিষেবায় কর্মরত ব্যক্তি এবং ভিন রাজ্যে কর্মরতরা পোস্টাল ব্যালটের সুবিধা পান। আগামী দিনেও এই সুবিধা অব্যাহত থাকবে বলে কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছে।
চলতি মাসের শুরু দিকে পোস্টাল ব্যালটে ভোটের সুবিধা আরও বিস্তৃত করার সুপারিশ করেছিল নির্বাচন কমিশন। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। ফলে তাঁদেরকে পোস্টাল ব্যালটের সুবিধার আওতায় আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া করোনায় আক্রান্য় হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল- এমন ব্যক্তিদেরকেও এই সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত বা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি এবং যাঁরা কোয়ারিনটিনে রয়েছেন তাঁদের জন্যও পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুবিধা বিস্তৃত করার কথা বলা হয়েছিল। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। সেইসঙ্গে ওই সময় মধ্যপ্রদেশে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন এই নির্বাচনে নতুন এই নিয়ম কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
কমিশনের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এই বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের তীব্র অসম্মতির কথা জানিয়ে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে চিঠি পাঠান দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সি। ভোটদান পদ্ধতিতে পরিবর্তন ঘটানোর কমিশনের একতরফা উদ্যোগকে ‘গণতন্ত্রের পক্ষে হুমকি’ আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। এর ব্যখ্যা করতে গিয়ে ওই চিঠিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন, এমন পরিবর্তনে ভোটের গোপনীয়তা ক্ষুন্ন হবে। যার জেরে প্রত্যের ভোটারে স্বচ্ছ ও অবাধ ভোটদান অসম্ভব হয়ে পড়বে। বিহারের প্রধান বিরোধী দল আরজেডি-ও এই নিয়ে আপত্তি জানায়। শেষ পর্যন্ত আগের অবস্থান থেকে পিছু হটল নির্বাচন কমিশন।