বিনোদন ডেস্ক: কয়েক দিন আগে কলকাতার কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে চুমু খেতে দেখা যায় এক প্রেমিক যুগলকে। পথচারীরা হা হয়ে সেই দৃশ্য দেখেন। তারই একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
ভিডিওটি অন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তুমুল চর্চা চলছে। নেটিজেনদের অনেকে “সমাজ রসাতলে গেল” বলে গলা উঁচু করেছেন। এ পরিস্থিতিতে প্রতিবাদ করেন ইন্ডিয়ান বাংলা সিনেমার আলোচিত অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। এবার সরব হলেন দুই বাংলার শ্রোতাপ্রিয় সংগীতশিল্পী কবীর সুমন।
মানুষের রুষ্ট প্রতিক্রিয়া দেখে হতবাক কবীর সুমন। ইন্ডিয়ান একটি গণমাধ্যমে তিনি বলেন, “আমি অবাক হচ্ছি, লোকে এতে রুষ্ট হচ্ছে দেখে। একটা মানুষ একটা মানুষকে চুমু খাচ্ছেন। একজন পুরুষ হয়তো কোনো মহিলাকে চুমু খাচ্ছেন কিংবা একজন মহিলা একজন পুরুষকে। একজন পুরুষ আর একজন পুরুষকে কিংবা এক নারী অন্য নারীকেও এভাবে চুমু খেতে পারেন। এই হানাহানির জগতে এর চেয়ে মধুর, এর চেয়ে সুন্দর আর কী হতে পারে?”
প্রকাশ্যে বান্ধবীকে চুমু খেতে চান কবীর সুমন। তার ভাষায়— “আমার না হয় ৭৬ চলছে। আগামী মার্চে ৭৭ বছর বয়সে পা দেব। সেভাবে দেখতে গেলে, আমি তো বুড়ো মানুষ। তারপরও এসব দেখে ভেবেছিলাম, বান্ধবীদের বলব, চলো তো আমরা চুমু খাই। দেখি তো কী হয়! তারা হয়তো রাজিও হবেন। কিন্তু আড়ালে। তার ন্যায্য কারণ আছে। বান্ধবীদের যুক্তি— ‘তোমাকে প্রকাশ্যে চুমু খেলে খবরের কাগজে নাম বেরিয়ে যাবে! অন্য কাউকে হলে হতো।’ আমার একাধিক বান্ধবী। কেউ হয়তো কারো বোন, বউও হতে পারেন। তাই ওদের যুক্তি মানা যায়। কিন্তু যারা চুমু খেলেন, তারা তো সেটা নন। ওরা তো চমৎকার একটা জিনিস করলেন। আমি ওদের কাছে কৃতজ্ঞ। তাদের উদ্দেশে বলব, সারা জীবন যেন ওরা এভাবে চুমু খেয়ে যেতে পারেন।”
প্রকাশ্যে এভাবে ভালোবাসা প্রদর্শন কি লোক দেখানো? এ প্রশ্নের জবাবে কবীর সুমন বলেন, “জোর গলায় বলেছি, একেবারেই না। লোক দেখানো মনে হয় না। উদাহরণ হিসেবে বলি, হিন্দুদের বিয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ‘লাজাঞ্জলি’। সেখানে আগুনে খই ফেলার সময় স্বামী কী সুন্দর পিছন থেকে তার নববধূকে জড়িয়ে ধরেন। এখানেও তো দুটো শরীর পরস্পরের স্পর্শ পায়। আহা, কী দৃশ্য! সেটাও তো প্রকাশ্যে হচ্ছে। তাতে কোনো আপত্তি উঠছে না তো? আবার খ্রিষ্টানদের বিয়ের পর পুরোহিত নির্দেশ দেন, এবার বর-কনেকে চুমু খেতে পারেন। তাতেও কারো সমস্যা নেই!”
উদাহরণ টেনে কবীর সুমন বলেন, “ধরুন, আমি কাউকে ভালোবাসছি। ৭৬-এ হতে পারে কিংবা ৮০। না হওয়ার কোনো কারণ নেই। ওই মুহূর্তে আমরা তো পৃথিবীতে একা! কী আসে যায়? ওই মুহূর্তে যদি বজ্রপাতেও আমাদের মৃত্যু হয়, তাতেই বা কী এসে যায়? বরং হানাহানির যুগে এটা তো বাঁচার, ভালোবাসার শক্তিশালী নিশান।”