- ডেভিল হান্ট কারা করছেন, ধরা পড়ছেন কারা?
ঢাকা অফিস- দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে সারা দেশে একযোগে পরিচালিত হচ্ছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’। এ অপারেশন যৌথভাবে পরিচালনা করছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিবি। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপারেশনে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পতিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন নষ্ট করতে না পারে সেই জন্য এ অপারেশন পরিচালনা করা হচ্ছে।
ইংরেজি শব্দ ডেভিল অর্থ শয়তান আর হান্ট অর্থ শিকার। ফলে ডেভিল হান্ট-এর অর্থ দাঁড়ায় শয়তান শিকার করা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত ডেভিল হান্ট বলতে দেশবিরোধী চক্র, সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীদের বোঝানো হয়েছে। এ বিষয়ে রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, প্রতিটি অপারেশনের একটি কোড নেম দেওয়া হয় অপারেশনকে ফোকাস করার জন্য।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে দেখা গেছে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সন্ত্রাসীরা দেশকে অকার্যকরের উদ্দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে। তারা ষড়যন্ত্র করে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে। এর মধ্যে তাদের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেশে কয়েকটি সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংঘটিত হয়েছে। তাই দেশের সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে এ অপারেশন শুরু করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর যৌথভাবে পরিচালিত এ অপারেশনের প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকটি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই লক্ষ্য পূরণে সারা দেশে একযোগে অপারেশন পরিচালনা করা হচ্ছে।
সরকার এ অভিযানকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সূত্রে জানা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অপারেশন ডেভিল হান্ট ঘোষণার পর সবগুলো বাহিনী একসঙ্গে সমন্বিতভাবে সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে। সব গোয়েন্দা তথ্য একসঙ্গে বিচার-বিশ্লেষণ করে নির্দিষ্ট টার্গেটকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
জানা গেছে গত শনিবার রাত থেকে সারাদেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ও নিয়মিত যৌথ অভিযানে আটক হয়েছে ৪ হাজার ৬০৪ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আটক হয়েছে ১ হাজার ৭৭৫ জন। আটককৃতদের মধ্যে ডেভিল হান্টে আটক হয়েছে ৬০৭ জন। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ সদর দফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অপারেশন ডেভিল হান্টে গত ২৪ ঘণ্টায় দুটি পিস্তল, একটি করে এলজি, ওয়ান শুটারগান ও পাইপগান, গুলি, কার্তুজসহ দেশী ধারালো অস্ত্র ছুরি-চাপাতিও উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের তথ্যমতে, প্রথম দিনের অভিযানে ১৩০৮ জন, দ্বিতীয় দিনে ১৫২১ জনকে আটক করা হয়। এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু করে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।