বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশের নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর; শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী, ময়মনসিংহ জেলার উত্তর অঞ্চল এবং সিলেট জেলায় হাজং সম্প্রদায়ের বসবাস। গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে এসব অঞ্চলে খুব দাপটের সঙ্গে বসবাস করেছে এই সম্প্রদায়ের মানুষ। শুধু তাই নয়, ঐতিহাসিক হাজং বিদ্রোহ, তেভাগা আন্দোলন, টঙ্ক আন্দোলনের নেতৃত্বে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন তারা।
হাজং সম্প্রদায়ের জীবন-সংগ্রাম নিয়ে নির্মিত হয়েছে বিশেষ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘হাজংদের জীবন সংগ্রাম’। সুজন হাজং-এর কবিতা অবলম্বনে এটি নির্মাণ করেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি। চলচ্চিত্রটির মুক্তির বিষয়ে এ পরিচালক বলেন—‘‘আগামী ৩১ জানুয়ারি হাজংমাতা ‘শহীদ রাশিমণি দিবস’। এদিন চলচ্চিত্রটির বিশেষ প্রদর্শনী হবে। এছাড়া একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণের পর অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মুক্তি দেওয়া হবে।’’
পরিচালক সোহেল রানা বয়াতি বলেন, ‘ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভারত ভাগ, মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তীতে নিজেদের টিকিয়ে রাখার সংগ্রামে হাজং জনগোষ্ঠীর সাহসী ভূমিকা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। গত দুই বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসকারী হাজংদের জীবন খুব কাছ থেকে দেখার চেষ্টা করেছি। সম্প্রতি ডকুফিল্মটির দৃশ্যধারণের কাজ শেষ করেছি।’
সুজন হাজং বলেন ‘‘আমার লেখা ‘হাজংদের জীবন সংগ্রাম’ কবিতাটিতে বীরাঙ্গনা শহীদ হাজংমাতা রাশিমণির আত্মত্যাগ, নারীর সম্ভ্রম রক্ষা, হাজংদের সুদীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য, তাদের বিলীয়মান সমৃদ্ধ সংস্কৃতির কথা, দুঃখ ও বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছি। ডকুফিল্মটিতে প্রান্তিক হাজং সম্প্রদায়ের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, টঙ্ক আন্দোলন, জমিদার প্রথা উচ্ছেদ, হাতি খেদা আন্দোলন, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের বীরত্ব ও সাহসিকতার গল্প নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি সুনিপুণভাবে চিত্রায়িত করেছেন।’’
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি বিরিশিরি, নেত্রকোণার প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটি। চিত্রগ্রহণ করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক কমল চন্দ্র দাস ও আশিক মাসুদ।