নিজস্ব প্রতিনিধি: বিরোধীরা এই রাজ্যের উন্নয়ন চোখে দেখতে পান না। সেটা দেখতে পান না দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী আর আব্দুল মান্নানরাও। কিন্তু সবাই তো আর জেগে ঘুমোন না আর সবাই কানা বা অন্ধও নন। তাই যাদের চোখে বাংলার উন্নয়ন ধরা পড়ছে তাঁরাই এক এক করে ডেকে নিচ্ছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। কখনও বা সেই ডাক আসছে রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে কখনও বা আবার ডাক আসছে অক্সফোর্ড থেকে। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। সেখান থেকেই এবার আমন্ত্রণ পেলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্বের অন্যতম সেরা বিতর্ক সভায় রাখতে হবে বক্তব্য। পিছিয়ে পড়া বাংলাকে কোন যাদুতে তিনি বিশ্বের সেরা উন্নয়নমুখী রাজ্যে পরিণত করলেন, শোনাতে হবে সেই রূপকথা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম শুধু সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, আজও বিশ্বের সেরা জ্ঞানভান্ডারের আঁতুরঘর হয়ে রয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্বের সেরা সব অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, সমাজতত্ত্ববিদরা ভিড় জমান অক্সফোর্ডের বুকে নিজেদের তুলে ধরতে, মতের আদানপ্রদান করতে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চোখও সর্বদা খুঁজে ফেরে সেই মুখকে যে শত বাধা অতিক্রম করেও যুদ্ধে জিতে যাওয়ার দুঃসাহস রাখে। যে নিজেকে মেলে ধরে অন্যকে বাঁচার অনুপ্রেরণা যুগিয়ে চলে। যার হাত ধরে সমাজ ও রাষ্ট্রের রূপান্তর ঘটে। এই দেশে সেই মুখ তো একটাই, বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই সেই মুখকেই এবার ডেকে পাঠানো হল বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা বিতর্ক সভায়। সেখানেই বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে হবে বাংলার উন্নয়নকে। দেখাতে হবে উন্নয়নের সেই সব সূচক, অভিমুখ ও পরিকল্পনা যা বদলে দিয়েছে বাংলার জনমানসের জীবনযাত্রাকে। কন্যাশ্রী, খাদ্যসাথী, সবুজসাথী, সবুজশ্রী, সেফ ড্রাউভ সেভ লাইফ, গতিধারা, যুবশ্রী, আমার বাড়ি, জলস্বপ্ন দিয়ে সেখানে বুনে আসতে হবে রূপকথার বাস্তবগাথা। দেখিয়ে দিতে হবে স্বপ্নকে সত্যি করে তোলার রাস্তা।
জানা গিয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি। প্রতি বছর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বুকেই বিশ্বের অন্যতম সেরা এই বিতর্ক সভার আসর বসে। সেখানেই বক্তা হিসাবে আমন্ত্রণ পান সেই সব মানুষেরা যারা শত বাধা বিঘ্নতার পরেও নিজ নিজ ক্ষেত্রে কিছু করে দেখাতে পারেন যা হাজার হাজার মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে, তাঁদের জীবনকে বদলে দিতে পারে। বাংলা আজ কতটা বদলে গিয়েছে তা বিরোধীরা, নিন্দুকেরা দেখতে না পেলেও বিদেশের মাটিতে বসে বেশ ভালো ভাবেই দেখতে পাচ্ছেন প্রকৃত বিচারকেরা। তাই তো তাঁরা এবারের বিতর্ক সভায় বক্তা হিসাবে ডেকে পাঠালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে যিনি বনধের বাংলাকে কর্মমুখী বাংলা করে দিয়েছেন, যিনি দুঃস্বপ্নের বাংলাকে স্বপ্নের বাংলা করে দিয়েছেন, যিনি পশ্চাদপদ বাংলাকে উন্নয়নমুখী বাংলা করে দিয়েছেন। যিনি জঙ্গলমহলের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছেন, পাহাড়ের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছেন, যিনি কৃষকদের তাঁদের জমির অধিকার ফিরিয়ে দিতে পেরেছেন, যিনি তাঁর রাজ্যবাসীকে তাঁদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে পেরেছেন। সেই মমতাকেই ডেকে পাঠিয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁরা শুনবে বদলা না নিয়েও বাংলাকে বদলে দেওয়ার রূপকথা। শোনাবে সেই রূপকথা গোটা বিশ্বের মানুষকে যাতে তাঁরাও অনুপ্রাণীত হন, যাতে তাঁরাও ঘুরে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে পারেন, নিজের আশেপাশের জগতটাকে যেন তাঁরা বদলে দিতে পারেন।
প্রতিবছর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বসে এই বিতর্ক সভা। এবারে করোনার আবহে অনেকেই এই বিতর্কসভা স্থগিত রাখতে বলেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু তাতে সায় দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কারন সেই করোনা। গোটা বিশ্বের মানুষ মুষড়ে পড়েছেন এই লকডাউনে। কোটি কোটি মানুষ হারিয়েছেন তাঁদের কাজ, স্বজন, বন্ধুবান্ধব। অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন। ভেঙেচুরে ছারখার হয়ে গিয়েছে তাঁদের জীবন। এখনই তো সেই রূপকথার যাদুকাঠি চায় যে সবাইকে আবারও স্বপ্ন দেখাতে পারবে, যে আবারও তাঁদের দুচোখে সুন্দর ভবিষ্যতের ছবি তুলে ধরতে পারবে, যে আবার তাঁদের জীবনযুদ্ধ ঘুরে দাঁড়াবার শক্তিটা দিয়ে যেতে পারবে। সেই সব ভেবেই অনলাইনে বসানো হচ্ছে বিতর্ক সভা। বক্তারা সবাই যে যার নিজ নিজ বাড়িতে, শহরে, রাজ্যে, দেশে বসে তাঁদের কথা তুলে ধরতে পারবেন। গোটা বিশ্ব শুনবে সেই কথা। করোনাকে জয় করে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে তাই জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে সেই বদলে যাওয়ার কথা শুনবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, শুনবে সারা বিশ্ব।