- স্বপ্ন দেখাচ্ছে সুন্দর নতুন আগামীর।
লন্ডন, ২৬ ফেব্রুয়ারি- বাংলাদেশের জেনজি’দের অনুসরণ করে দক্ষিণ আফ্রিকার জেনজিরাও নতুন আগামীর স্বপ্ন দেখাচ্ছে। বাংলাদেশের মতো আফ্রিকার দেশে দেশে এখন নতুন প্রজন্ম (জেনজি) লাইমলাইটে চলে এসেছে। ২০২৪ সালে তারা কেনিয়ায় শাসকদলের ভিত্তি কাঁপিয়ে ছেড়েছে। তাদের দুর্বার আন্দোলনে ভীত হয়ে সেনেগালের সরকার নানামুখী সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিতে বাধ্য হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহাসিক দল এএনসিকেদেশটির ঐতিহাসিক দল এএনসিকেও তারা প্রবল আন্দোলনের মাধ্যমে সংস্কারের পথে হাঁটতে বাধ্য করছে। কেনিয়ায় বিতর্কিত শুল্ক আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দেশজুড়ে প্রবল আন্দোলন গড়ে তুলেছিল ছাত্র-জনতা। ২০২৪ সালের ৩০ জুন রাজধানী নাইরোবিতে পুলিশের গুলিতে ২০ ছাত্র প্রাণ হারায়। এতেও তারা দমে যায়নি। তারা নিজেদের আফ্রিকার ‘সাহসী প্রজন্ম’ ও ‘সচেতন তরুণ’ দাবি করে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।
ফ্রান্সভিত্তিক সংবাদ সংস্থা এএফপি আফ্রিকার ছয়টি দেশের জেনজি প্রজম্মের সঙ্গে কথা বলেছে। ডাকার থেকে নাইরোবি আর জোহানেসবার্গ থেকে আবিদজান পর্যন্ত নতুন প্রজন্মের চোখে-মুখে তারা অভিন্ন চেতনার জাগরণ দেখতে পেয়েছে। তারা সবাই নিজ নিজ দেশকে মনের মতো করে গড়ে তুলতে চাইছে। তবে তাদের কর্মকৌশল একই ধরনের নয়।
যেসব শিশু ২০০০ সালের সামান্য আগে অথবা সামান্য পরে জন্মেছে, তাদের চিন্তাচেতনার সঙ্গে প্রবীণদের চেতনার কোনো মিল নেই। জেনজিদের রাজনৈতিক কমিটমেন্ট এখন বেশ প্রখর। তারা ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর প্রবল বিরোধিতা করছে। তারা যেকোনো মূল্যে দেশের উন্নয়ন প্রত্যাশা করছে। দুর্নীতিবাজ সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো তাদের আর টানতে পারছে না।
তারা পড়াশোনা শেষ করে দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি উন্নত দেশে অভিবাসী হতে আগ্রহী। আফ্রিকার বেশির ভাগ দেশের সরকার বেজায় রকমের দুর্নীতিপরায়ণ। নতুন প্রজন্ম তাদের ওপর চরম বিরক্ত। নাইজেরিয়ায় তরুণ প্রজন্মের মাঝে একটি স্ল্যাং প্রচলিত। সেটি হচ্ছে ‘জাপা’। ইয়ুরবা ভাষায় যার অর্থ ‘পালিয়ে যাও’। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই পালিয়ে যাওয়াকেও তারা দেশপ্রেম ভাবছে। এক ছাত্র বলেছেন, “সব ছাত্রের মাঝে ‘জাপা সিনড্রোম’ রয়েছে। এটাই আমাদের দেশপ্রেম।”
শিক্ষার্থীরা বলছে, অসহ্য লোডশেডিংয়ের কারণে তারা পড়াশোনাই করতে পারছে না। তারা রাজনীতিতে না জড়িয়ে নানা ধরনের সমাজসেবামূলক তৎপরতায় নিজেদের জড়িয়ে রাখছে। তারা মনে করছে, রাজনীতিবিদদের মাঝে তরুণদের সংখ্যা বেশি হওয়া উচিত। তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন মতে, সাব-সাহারান দেশগুলোর ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর গড়পড়তা বয়স ৩০। তারা আবার রাজনীতিসচেতন। প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর তাদের কোনো আস্থা নেই। তাদের বিশ্বাস, আফ্রিকার নতুন প্রজন্মকে জাগাতে পারলে তারা একদিন বিশ্বটাকে জয় করতে পারবে।