বাংলাদেশকে এশিয়ার নিরাপদ প্রোডাকশন হাউজ বা উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে অবস্থানরত জার্মানির নাগরিক ড্যানিয়েল সিডল।
শনিবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকা পুরুনা পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে ‘সেলিব্রেটিং ৫০ ইয়ার অব বাংলাদেশ’ নামে নতুন বইটি প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আবির আবদুল্লাহর ফটোগ্রাফিসহ এই বইটি লিখেছেন ড্যানিয়েল সিডল।
লেখক ড্যানিয়েল সিডল – বাংলাদেশ জার্মান চেম্বার অফ কমার্সের নির্বাহী পরিচালক এবং সিএনএন সংবাদের একজন প্রাক্তন অ্যাঙ্কর, যিনি বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তিনি কয়েক দশক থেকে বাংলাদেশের প্রচার ও ব্র্যান্ডিং করে আসছেন।
এই বইটিতে ড্যানিয়েল সিডল এমন একটি দেশের উন্নয়ন এবং রূপান্তর (বাংলাদেশ) বর্ণনা করেছেন, যেখানে স্বাধীনতার জন্য কঠোর লড়াই করতে হয়েছিল। স্বাধীনতার সংগ্রাম থেকে ব্যতিক্রমী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে একটি বৈশ্বিক উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
লেখক বইটিতে শুধুমাত্র জানার তথ্য উপস্থাপন করেননি। যদিও এতে রয়েছে ভবিষ্যৎ-প্রাসঙ্গিক সমস্যাগুলোর দিক নিদর্শক। লেখক গত ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে অন্য যেকোনো ইউরোপিয়ানের থেকে ভালো ধারণা রাখেন। যে জন্য তার বইটি দেশের বাহিরে বাংলাদেশের পণ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে আগ্রহ তৈরি করবে।
অনুষ্ঠানে ড্যানিয়েল সিডল বলেন, ‘এক সময় বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং খারাপ কাজের পরিবেশসহ একটি দরিদ্র দেশ হিসাবে চিত্রিত করা হয়েছিল। এই বইটিতে আমরা বাংলাদেশের সাফল্যের গল্প উপস্থাপনের জন্য ৫০টি তথ্য এবং ৫০টি ব্যক্তিগত গল্পের একটি তালিকা সংগ্রহ করেছি। এখানের একটি ছবি এক হাজারেরও বেশি শব্দের কথা বলে। এবং এই কথা মাথায় রেখেই প্রখ্যাত ফটোগ্রাফার আবির আবদুল্লাহ বইটির অধ্যায়গুলোকে সমৃদ্ধ করেছে। বইটি রঙিন এবং বহুমুখী দিকের বাস্তবসম্মত চিত্র দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে।’
তিনি বলেন- ‘বাংলাদেশ এশিয়ায় নিরাপদ প্রোডাকশন হাউস। আমার দৃষ্টিতে বাংলাদেশ বাঘের মতো সারা বিশ্বে উদীয়মান জাতি। ইতোমধ্যে বইটি ব্রাসেলস, লন্ডনের পরিচিতদের মধ্যে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে নিউ ইয়র্ক, লন্ডন এবং বার্লিনে ‘বাংলাদেশের জন্য ৫০ বছর বার্ষিকী কনসার্ট’ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে অনুষ্ঠানটি বাতিল করতে হয়েছে।’
এই বিশেষ বার্ষিকীকে তিনি একটি মিউজিক বিডিওর মাধ্যমে স্মরণ করতে, ‘থ্রট দ্যা টাইগার্স আই’ নামের একটি গান রচনা করেন। এটি করেছেন হলিউডের সঙ্গীত পরিচালক রবার্ট বার্থা। এই গানে ৪টি দেশের শিল্পীরা অংশ নিয়েছেন। তারা হলেন: ওজি লিনো (মাল্টা), সারালস (স্পেন), ইনান লিমা (ব্রাজিল), অ্যালিকজা ক্রজাসজ (পোল্যান্ড), কোনাল (বাংলাদেশ), লিন্ডা লিনি (সুইডেন), বীরজীবন এবং সুন্নি আই (ফ্রান্স), লিয়ানে এভারস (আয়ারল্যান্ড), নিনাদ (বাংলাদেশ) এবং রবার্ট বার্থ নিজে (জার্মানি)।