জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তীব্র সমালোচনা করছেন বিজেপি নেতারা। ‘জন গন মন’-কে অশ্রদ্ধা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মুম্বই সফরে রয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই মমতার বিরুদ্ধে এবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করল শাসক দল বিজেপি। বিজেপি-র অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়ারে বসে জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছেন। ঘটনা নিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে সাংসদ রাজু বিস্ত, অমিত মালব্য সহ একাধিক নেতাই টুইট করেছেন। তবে এ বিষয়ে পাল্টা এবার ট্যুইট করলেন কুণাল ঘোষ। মমতার পাশে দাঁড়িয়ে কুণাল ঘোষ তাঁর ট্যুইটের মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন বিজেপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কুৎসা করছে।
পালটা যুক্তি সাজিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষও। কুণাল ঘোষ বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। গান গাওয়া আর গানের ভাবার্থ বোঝানো আলাদা। সেটা তো বুঝতে হবে। জনগণমন অধিনায়ক জয় হে, ভারত ভাগ্যবিধাতা, এই গোটা বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। ভারতকে কেন ভারত মা বলা যায়, সেটাও বুঝিয়েছেন। জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন বিজেপি নেতার। গানের শব্দ ধরে ভাবার্থ বিশ্লেষণ করে দেশের ঐক্য, ঐতিহ্য, সম্প্রীতি, সংহতির কথা তুলে ধরছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি না বোঝে প্রকৃত জাতীয়তাবাদ, না বোঝে জাতীয় সঙ্গীত, না বোঝে জাতীয় সংহতি।’
পালটা জবাব দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। একটি টুইট করে অমিত মালব্য সাফ লিখেছেন, ‘জাতীয় সঙ্গীত শুরু করার সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বসেছিলেন। বাংলার সংস্কৃতি, দেশের জাতীয় সঙ্গীত ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অপমান করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’ অন্যদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘এভাবে একজন মুখ্যমন্ত্রীর জাতীয় সঙ্গীততের অবমাননা মেনে নেওয়া যায়? প্রথমে তো তিনি বসে বসে জাতীয় সঙ্গীত পাঠ করা শুরু করে দিয়েছিলেন। তারপর মাঝপথে ছেড়ে দেন। লজ্জায় বাঙালির মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে।’
বিজেপি নেতারা যে ভিডিও টুইটে পোস্ট করে মমতার বিরুদ্ধে জাতীয় সঙ্গীতকে অবমাননার অভিযোগ তুলেছেন সেখানে দেখা গিয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুম্বইয়ে জাতীয় সঙ্গীত শুরুর মুহূর্তে নিজের আসনে বসে ছিলেন। এরপর তিনি উঠে দাঁড়ান। পরে জাতীয় সঙ্গীতের প্রথম চারলাইন উল্লেখ করেই ‘জয় মহারাষ্ট্র’, জয় বেঙ্গল বলে আসনে বসে যান। তবে নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার শুরু থেকে সবাই উঠে দাঁড়ান সম্মান জানানোর জন্য। এটাইতো সম্মান। অথচ… এই বিষয়টিকে নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে ময়দানে নেমেছে পদ্ম শিবির। সেই ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে ‘বিজেপি বেঙ্গল’-এর টুইট্যার অ্যাকাউন্ট থেকেও।
বঙ্গ-বিজেপির টুইটার থেকে ভিডিয়োটি পোস্ট লেখা হয়েছে, “প্রথমে বসে, তারপর দাঁড়িয়ে অর্ধেক জাতীয় সঙ্গীত গাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একজন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি আজ বাংলার সংস্কৃতি,জাতীয় সঙ্গীত এবং সর্বোপরি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবমাননা করেছেন। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি আক্রমণ শানিয়ে একই ভিডিও পোস্ট করে বলেছেন, “একটি সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠানকালে মুম্বইয়ের বিশিষ্টজনের সঙ্গে বৈঠকে বসে থেকে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি কি জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার যথাযথ নিয়ম জানেন না, নাকি তিনি জ্ঞাতসারেই এই অবমাননা করেছেন? ”