শিরোনাম
বৃহঃ. ডিসে ৪, ২০২৫

বিভাগীয় শহরের বিক্ষোভে জামায়াতের নেতাকর্মীদের ব্যাপক ঢল

ঢাকায় মহাসমাবেশের অনুমতি না দেওয়ার প্রতিবাদে সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ করেছে জামায়াতে ইসলামী। রবিবার বিভাগী শহর গুলোতে অনুষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভে দলটির নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছিল।

বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের বাইরে জামায়াতে ইসলামী একমাত্র রাজনৈতিক দল যারা একযোগে সব বিভাগীয় শহরে এরকম নেতাকর্মীর ব্যাপক উপস্থিতিতে বিক্ষোভ করার সক্ষমতা রাখে।

খুলনার বিক্ষোভ:

বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাস করি। আওয়ামী লীগ প্রতিদিন মিছিল করে, মিটিং করে তাদের অনুমতির দরকার হয় না। অথচ আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ কর্মসূচির জন্য বারবার অনুমতি চাওয়া হলেও পুলিশ অনুমতি দেয় না।’

খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে রোববার (৬ই আগস্ট) নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গত ৪ঠা আগস্ট রাজধানী ঢাকা সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশব্যাপী বিভাগীয় শহরগুলোতে প্রতিবাদ সমাবেশের অংশ হিসেবে খুলনাতে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, ‘সংসদ ভেঙে দিন, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। দ্রব্যমূল্য কমান, জনদুর্ভোগ কমান, লুটপাট বন্ধ করুন। জনগণকে স্বস্তি দিন, মুক্তি দিন। অন্যথায় জনগণের মুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গোটা বাংলাদেশে গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে। জনগণ ফুঁসে উঠেছে। জনগণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করইে ছাড়বে ইনশাআল্লাহ।

নির্বাচন নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে তিনি বলনে, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নির্বাচন থেকে আলাদা করার জন্য পরিকল্পিতভাবে রায় দেয়া হচ্ছে। বিরোধী দলের নেতাদের জেলে পুরে রেখে নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। জনগণ সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবে ইনশাআল্লাহ।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের পরিচালনায় বক্তব্য দেন ও উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম, ছাত্র শিবির খুলনা মহানগরী সভাপতি মো: তৌহিদুর রহমান, খুলনা সদর থানা আমীর মো: আবু তারিন, খালিশপুর থানা আমীর মো: ইকবাল হোসেন, হরণিটানা থানা আমীর আব্দুল গফুর, লবণচরা থানা আমীর মাস্টার হানিফ বালী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন খুলনা মহানগরীর সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।

চট্টগ্রামে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল:

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ আটক সকল নেতা-কর্মী ও আলেম ওলামাদের মুক্তি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ও রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ সারাদেশে সভা সমাবেশ করার সাংবিধানিক অধিকার না দেওয়ার প্রতিবাদে মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের নেতৃত্বে প্রবল বৃষ্টির মাঝে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরী। কয়েক হাজার প্রতিবাদী জনতা এতে অংশগ্রহণ করেন।

ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের বিক্ষোভ:

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ময়মনসিংহেও বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ময়মনসিংহ মহানগরী শাখা।

রোববার সকালে নগরীর সানকি পড়া বাজার থেকে মিছিল শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা স্কুলের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন ও বক্তব্য রাখেন মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রটারি মাহবুবুল হাসান।

নারায়ণগঞ্জ মহানগরী:

৪ঠা আগস্ট ঢাকায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর উদ্যোগে ৬ই আগস্ট বিক্ষোভ সমাবেশে ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

মহানগরীর কর্মপরিষদের অন্যতম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে ও প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- কফিল উদ্দিন আহমেদ, আবুল কালাম আজাদ, ফজলুল হাই জাফরী, খলিলুর রহমান টিটু, আব্দুল গফুরসহ নেতৃবৃন্দ।

গাজীপুর মহানগরী:

গাজীপুর মহানগর জামায়াতের উদ্যোগেও রোববার বিক্ষোভ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য গাজীপুর মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি মো: খায়রুল হাসানের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিলটি ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভুষির মিল থেকে শুরু হয়ে সাইনবোর্ড এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য গাজীপুর মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো: হোসেন আলীর সঞ্চালনায় মিছিল উত্তর সমাবেশে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য গাজীপুর মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো: আফজাল হোসাইন, মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য মো: নজরুল ইসলাম, মহানগর শ্রমিক কল্যাণ সভাপতি মো: মহিউদ্দিনসহ জামায়াতের মহানগর এবং থানা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তারা বলেন, জামায়াতকে রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে না দিয়ে সরকার বারবার সাংবিধানিক অধিকার হরণ করছে। ৪ঠা আগস্ট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ছিল। সভা-সমাবেশ করা সংবিধান স্বীকৃতি অধিকার। অথচ সরকার জামায়াতকে তার রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে না দিয়ে বারবার আমাদের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করছে। বিগত ১৫ বছর যাবত জামায়াতকে নির্মূল করার জন্য সরকার সব ধরনের অপচেষ্টা চালিয়েছে।

বক্তারা বলেন, আমরা বলে আসছি, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাই। বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী কোনো ধরনের সংঘাত, সংঘর্ষে বিশ্বাসী নয়। তারপরেও পুলিশ প্রশাসন সমাবেশে সহযোগিতার পরিবর্তে সংঘাতমুখর পরিবেশের অবতারণা করেছে। এ ধরনের আচরণ অগণতান্ত্রিক, অন্যায় ও অনৈতিক। আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

জামায়াত নেতারা বলেন, আমরা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধার এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি আদায়ে রাজপথে ছিলাম, আছি এবং থাকবো ইনশাআল্লাহ। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই গণআন্দোলনে শরিক হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *