কমিউনিটি নিউজ ডেস্ক: প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিলেতে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। পূর্বলণ্ডনের ঐতিহাসিক শহীদ আলতাব আলী পার্কে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যে দিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ ও তাঁদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
ঐতিহাসিক গৌরবোজ্জ্বল এই দিবসটি ঘিরে শহীদ মিনারে বিট্রিশ বাংলাদেশি এমপি, মেয়র, স্পিকার, কাউন্সিলর, সাংবাদিক, শিক্ষক ও বাংলাদেশ হাইকমিশন ছাড়াও শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের উপস্থিতি ছিলো লক্ষণীয়।
বিলেতে বাংলা মিডিয়ার প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রভাতফেরিতে অংশ নেয় এবং সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে একের পর এক শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমানের নেতৃত্বে প্রভাতফেরিতে অংশ নেন যুক্তরাজ্যে নিয়োজিত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম ও টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিলের স্পিকার কাউন্সিলর জাহেদ চৌধুরী। সাংবাদিকদের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, আমাদের মাতৃভাষা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কমিউনিটি ভাষা সার্ভিস পুনরায় চালু করতে টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিল ৮ লক্ষ পাউন্ড বরাদ্দ করেছে। আমাদের মাতৃভাষা ও এর ইতিহাস যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মের কাছে ভালোভাবে পৌঁছাতে যেকোনো সহযোগিতায় আমি প্রস্তুত। তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বাংলাভাষার বিকাশে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। সাইদা তাসনিম মুনা বলেন, প্রবাসে বাংলা ভাষার বিকাশে বাংলাদেশি কোন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন যদি কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে আর্থিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও বাংলা বইদেয়া সহ সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ এমপি আফসানা বেগম বলেন, আমিপ্রতি বছর পার্লামেন্টে আন্তর্জাতিক ভাষা নিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করি। আমি গত দুবছর আগে সংসদে বাংলা সিলেটি ভাষায় কথা বলেছিলাম, যা আগে কখনো হয়নি। এ নিয়ে বিতর্কও হলেও আমি থেমে যায়নি। আমাদের মাতৃভাষা নিয়ে আমাদের গর্ব করা উচিত। সংসদে মাতৃভাষায় কথা বলার চর্চা নিয়মিত করা উচিত। আমি চাই সবাই তার নিজ মাতৃভাষায় সংসদে কথা বলুক, নিজ নিজ মাতৃভাষা সংসদে তুলে ধরুক।
লণ্ডনের বাইরে বাংলাদেশি অধ্যুষিত শহরগুলোতেও যথাযোগ্য মর্যদায় দিবসটি পালিত হয়েছে। শহরগুলোর স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ মিনারগুলোতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের সম্মান জানান মাতৃভাষা প্রেমীরা।