ত্রিপুরা নিউজ ডেস্ক: বিশালগড়ে এই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় কার্নিভাল। সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে মহকুমা প্রশাসন এবং বিশালগড় পুর পরিষদের সহযোগিতায় স্থানীয় সংস্কৃতিপ্রেমী শুভবুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সফলভাবে সম্পন্ন হয় কার্নিভাল “মায়ের বিদায় ” বিশালগড়ের বনেদি ক্লাবগুলো প্রতিবছর নানা থিমে দেবী দুর্গা বন্দনায় ব্রতী হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। পূজার চারদিন জনজোয়ারে ভাসে গোটা বিশালগড়। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আরক্ষা প্রশাসনের ভূমিকা প্রশংসনীয়।
বিশেষ করে স্থানীয় বিধায়ক সুশান্ত দেব বিনিদ্র রাত জেগে ঘুরেছেন মন্ডপে মন্ডপে। দশমীতে বিষাদের ছায়া নেমে আসে। কিন্তু এবারের মায়ের বিসর্জন পর্ব সম্পন্ন হয় ভিন্ন আঙ্গিকে। বিধায়ক সুশান্ত দেবের অনুপ্রেরণায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় কার্নিভাল।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশালগড় ব্রিজ চৌমুহনীতে কার্নিভালের মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধন করেন স্থানীয় বিধায়ক সুশান্ত দেব। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপাহীজলা জেলা সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক অন্তরা দেব সরকার, কিশোর বর্মন, বিন্দু দেবনাথ, তফাজ্জল হোসেন, সমাজসেবক গৌরাঙ্গ ভৌমিক, মহকুমা শাসক রাকেশ চক্রবর্তী, অতিরিক্ত মহকুমা শাসক ত্রিদীপ সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশালগড় পুর পরিষদের চেয়ারম্যান অঞ্জন পুরকায়স্থ। মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি কার্যালয়ের শিল্পীরা উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন। স্থানীয় শিল্পীদের দলগত নৃত্যে উদ্বোধনী পর্ব জমজমাট হয়ে ওঠে। চারদিকে থেকে ভিড় করেন অগুনতি মানুষ। কার্নিভালে অংশ নেন বিশালগড় পুর পরিষদ এলাকার ১১ টি ক্লাব। প্রতিমা সহ সুসজ্জিত শোভাযাত্রা করে একে একে অংশ নেন পূজা আয়োজকরা। এবং নিজ নিজ ক্লাবের প্রদর্শনী তুলে ধরেন।
কার্নিভালে অংশগ্রহনকারী ক্লাব গুলোর মধ্যে সার্বিক উপস্থাপনার ওপর প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থানাধিকারী ক্লাব গুলোকে পুরস্কৃত করা হবে। বিশালগড়ের বুকে প্রথমবারের মতো মায়ের বিদায় কার্নিভাল উপভোগ করতে ভিড় জমান আবালবৃদ্ধবনিতা। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় আরক্ষা প্রশাসনকে। টিএসআর সিআরপিএফ সহ পুলিশ, মহিলা পুলিশ মোতায়েন ছিল। এল ই ডি স্ক্রিনে গোটা অনুষ্ঠান পর্ব সরাসরি সম্প্রচার করায় সুবিধা হয়েছে দর্শনার্থীদের। কার্নিভালে প্রদর্শন শেষে ক্লাবগুলো প্রতিমা নিয়ে চলে যায় বিজয় নদের বিসর্জন ঘাটে। সেখানে অভূতপূর্ব ব্যবস্থাপনা ছিল পুর পরিষদের। ক্রেনের সাহায্যে প্রতিমা গাড়ি থেকে নামিয়ে নদীতে বিসর্জন করা হয়। সেখানে পুর পরিষদের শ্রমিকরা যাবতীয় কাজ সম্পাদন করেন। কার্নিভালের উদ্বোধক বিধায়ক সুশান্ত দেব বলেন এবারের পূজায় বিশালগড়ে বাড়তি উন্মাদনা পরিলক্ষিত হয়। পূজা আয়োজনের পাশাপাশি সামাজিক কাজে অংশ নিয়েছে ক্লাবগুলো। শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ প্রশাসন বিনিদ্র রাত জেগে কাজ করেছে। প্রথমবারের মতো কার্নিভাল সফল করতে মহকুমা প্রশাসন, পুর পরিষদ, বিদ্যুৎ দপ্তর, সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্বগ, সাংবাদিক বন্ধুরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। এরজন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।