দ্য ওয়াল ব্যুরো: সম্প্রতি বিহারের জয়প্রকাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সিলেবাসে কিছু বদল করা হয়। তাতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নতুন বইতে ‘লোকনায়ক’ জয়প্রকাশ নারায়ণ ও সমাজবাদী নেতা রামমনোহর লোহিয়া সম্পর্কে পরিচ্ছদগুলি বাদ দেওয়া হয়েছে। তার জায়গায় ঢোকানো হয়েছে জনসংঘের নেতা দিনদয়াল উপাধ্যায় সম্পর্কে একটি পরিচ্ছদ।
রাজ্যের শিক্ষা দফতর থেকে সিলেবাস পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার মনে করেন, সিলেবাসের এই বদল অন্যায় ও অবাঞ্ছিত। নীতীশ রাজ্যের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন, সিলেবাস বদল করতে হলে আগে যেন রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। তাঁর কথায়, ‘ জয়প্রকাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেভাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সিলেবাস বদল করা হয়েছে, তাতে কোনও রীতিনীতি মেনে চলা হয়নি। এই সিলেবাস মানুষের ভাবাবেগকে সম্মান দেয় না। আমার সরকার এই সিলেবাস কখনই মানবে না।’ আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদব যখন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন ওই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন। তিনি সিলেবাস বদল প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন, ‘আরএসএস সমর্থিত বিহার সরকার মহান সমাজতন্ত্রী নেতাদের মতাদর্শ সম্পর্কে ছাত্রদের জানাতে চায় না’।
লালু টুইটারে লিখেছেন, ‘৩০ বছর আগে আমি আমার কর্মভূমিতে জেপি ইউ প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। এখন আরএসএস সমর্থিত বিহার সরকার মহান সমাজবাদী নেতাদের মতাদর্শ সিলেবাস থেকে বাদ দিচ্ছে। এমনটা মেনে নেওয়া যায় না।’
ছাপরা জেলায় অবস্থিত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ অফিসারকে বৃহস্পতিবারই পাটনায় ডেকে পাঠানো হয়। তাঁদের প্রশ্ন করা হয়, যে নেতার নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তাঁর জীবনী ও কর্মকাণ্ড সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হল কেন? রাম মনোহর লোহিয়ার জীবনীই বা সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কেন? সিলেবাস থেকে সমাজবাদী নেতাদের জীবনী বাদ দেওয়া নিয়ে প্রথমে প্রতিবাদ করে ভারতীয় ছাত্র ফেডারেশনের স্থানীয় শাখা। সংগঠনের নেতা শৈলেন্দ্র যাদব বলেন, ‘আশ্চর্যের ব্যাপার হল, যাঁর নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাঁর জীবনী ও আন্দোলনের কথাই সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হল।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারুক আলি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা প্রাক্তন রাজ্যপাল লালজি ট্যান্ডন নতুন সিলেবাস অনুমোদন করেছিলেন। সিলেবাস পরিবর্তন নিয়ে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিহারের রাজনীতি। আরজেডি-র অভিযোগ, এর পিছনে বিজেপি-জেডি ইউ সরকারের ‘গোপন অ্যাজেন্ডা’ রয়েছে।