বিহারে বেজে গেলো পঞ্চায়েত ভোটের দামামা। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের ২০ তারিখ থেকে নভেম্বর মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত ১০ দফায় পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বিহারে। আর এই পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে বিহারের রাজনীতি ফের সরগরম হয়ে উঠতে শুরু করেছে। বিহারে শেষ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনী বৈতরণী পার করেছিল নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড বা জেডিইউ। এরপর নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হলেও মূল চালিকা শক্তি থাকে বিজেপির হাতে। আর তারপর থেকেই বিজেপি-জেডিইউ সম্পর্ক খুব একটা ভালো জায়গাতে নেই। সম্প্রতি পেগাসাস কাণ্ডেও বিজেপির বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করেছেন খোদ নীতীশ কুমার। এই অবস্থায় বিহারের আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন বিজেপি এবং জেডিইউ দুই শিবিরই আলাদা আলাদা প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে লড়তে পারে। সেক্ষেত্রে বিহারের পঞ্চায়েত নির্বাচন বিজেপি এবং জেডিইউ দুই শিবিরের জন্যই শক্তি পরীক্ষা হতে চলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অন্যদিকে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ছেড়ে কথা বলবে না লালু প্রসাদের আরজেডি। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিহারের এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে উঠে আসে আরজেডি। সেক্ষেত্রে পঞ্চায়েত ভোটে তারা যে বিজেপি ও জেডিইউ শিবিরকে চাপে রেখে উঠে আসতে চাইবে তা স্পষ্ট। বিহারের মাটিতে যাদব সম্প্রদায়ের ভোট সমীকরণই আরজেডির কাছে অন্যতম ভরসা হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি, বিহারে ক্রমবর্ধমান অপরাধ গ্রাফ, মাদকের চোরাচালান এবং কর্মসংস্থানের অভাবকে হাতিয়ার করেই নির্বাচনী প্রচারে জোর দিতে পারে আরজেডি নেতা তথা লালুপুত্র তেজস্বী ও তেজপ্রতাপ।
রাজনৈতিক মহলের মতে, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে যেহেতু আরজেডি সুপ্রিমো লালু প্রসাদ যাদব জামিনে বাইরে রয়েছেন। ফলে আরজেডি যে বাড়তি উত্সাহ নিয়ে ময়দানে ঝাঁপাবে তা স্পষ্ট। অন্যদিকে বিজেপি ও আরজেডিকে চাপে রাখয়ে কম যাবেন না জেডিইউ নেতা তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারও। রাজনৈতিক মহলের মতে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি দলিত সম্প্রদায়ের কার্ড খেলে বাজিমাত করার পন্থা নিতেই পারেন। তার উপর নীতিশ কুমারের পক্ষে রয়েছে বিহারের মহিলা ভোটারদের একটি বড় অংশ। ফলে দলিত ও মহিলা ভোটারের উপর ভর করে পঞ্চায়েত নির্বাচনে নীতিশ কুমারের দল চমক দেখালেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বিহারে পঞ্চায়েত ভোটের প্রথম দফা অনুষ্ঠিত হতে পারে ২০ সেপ্টেম্বর। দ্বিতীয় ধাপের ভোট ২৪ সেপ্টেম্বর, তৃতীয় ধাপের ভোট ৪ অক্টোবর হওয়ার কথা রয়েছে। চতুর্থ দফার ভোট ৮ অক্টোবর, পঞ্চম পর্যায়ের ভোট ১৪ অক্টোবর, ষষ্ঠ দফার ভোট ২২ অক্টোবর, সপ্তম পর্বের ভোট ৩১ অক্টোবর, অষ্টম পর্যায়ের ভোট হবে ৭ নভেম্বর, নবম পর্ব ১৫ নভেম্বর এবং দশম এবং চূড়ান্ত পর্ব ২৫ নভেম্বর হওয়ার কথা রয়েছে।