স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন ‘জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন পাবে।’ পরে নিজেই বুঝে ছিলেন, এই আশ্বাস বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গেল। পরের বারের বক্তব্যে বলেছিলেন ‘জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারির প্রথমেই বাংলাদেশ ভ্যাকসিন পাবে।’ স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো: আবদুল মান্নান আরেক কাঠি সরস। তিনি বলেছিলেন ‘বিশ্বে ভ্যাকসিন আসার সাথে সাথে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন পাবে। এক দিন, এক ঘন্টা, এক মুহুর্তে দেরি হবে না।’ কিন্তু কথার মালায় মানুষকে সাময়িক ভাবে মোহবিষ্ট করা যায়, সমস্যার সমাধান করা যায়না।
বিশ্বে এই মুহূর্তে ১০৭টি দেশে কোভিড ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়ে গেছে। কেউ দিচ্ছে ফাইজার, কেউ মর্ডানা, কেউ এ্যাস্টোজেনিকা কেউ স্পুটনিক, আর কেউ চীনা ভ্যাকসিন। আগামী সপ্তাহ থেকে ভারত ভ্যাকসিন প্রয়োগের মহাযজ্ঞ শুরু করছে। কিন্তু বাংলাদেশে ভ্যাকসিন কবে আসবে তার কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য কারো কাছে নেই। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের একের পর এক ভুল সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গেছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শুধু ভারতের দিকে ভ্যাকসিন জন্য তাকিয়ে থাকার চরম মূল্য বাংলাদেশকে দিতে হতে যাচ্ছে বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ভ্যাকসিন ইস্যুতে একের পর এক ভ্রান্তির পথে হেটেছে বাংলাদেশ। যেমন: সিনোভ্যাকের ট্রায়ালে কালক্ষেপন: চীনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের ভ্যাক্সিনের তৃতীয় ধাপে অর্থাৎ মানবদেহে ট্রায়ালের অনুমতি চায়। বিএমআরসি এই ট্রায়ালের ইথিক্যাল (নৈতিক) অনুমোদন দিলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় ঐ ফাইল একমাসের বেশি আটকে রাখে। এরপর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এলে, তিনি অনুমোদনের নির্দেশ দেন। কিন্তু ততোক্ষণে সর্বনাশ যা হবার হয়ে গেছে। সিনোভ্যাক ট্রায়ালের জন্য আর্থিক অংশগ্রহণ দাবী করে। অথচ প্রথমেই যদি সিনোভ্যাককে ট্রায়ালের জন্য অনুমোদন দিতো। তাহলে সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিনে বাংলাদেশ অগ্রাধিকার পেতো।
ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়ে উপেক্ষা: বাংলাদেশে ফাইজারের বিপণনের দায়িত্বে আছে রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যাল। ঐ প্রতিষ্ঠান থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ফাইজারের ব্যাপারে সব সময় নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের বক্তব্য হলো, ফাইজারের ভ্যাকসিন ব্যবহার অনুপোযোগী। এটা মাইনাস ৭০ ডিগ্রী তাপমাত্রায় রাখতে হয়। কিন্তু রেডিয়েন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মাইনাস ৭০ ডিগ্রী সংরক্ষণ সক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব। স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয় যদি উদ্যোগ নিতো তাহলে এ ধরনের ব্যবস্থা করা অসম্ভব হতো না। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয় এনিয়ে একেবারে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেয়। বাংলা ইনসাইডার