মাঘের শীতে কাবু হয়ে পড়েছে ভূরুঙ্গামারীর মানুষ। ঋতু চক্রে পৌষ ও মাঘ এই দুই মাস শীত কাল। এখন চলছে মাঘের মধ্যভাগ।পৌষের মাঝামাঝি থেকে টানা একমাস ধরে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। তার সাথে বইছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। করোনা, বন্যার পর এবারকার শীতে নাকাল সাধারন মানুষ। দিন যাচ্ছে শীতের তীব্রতা যেন বেড়েই চলছে। তার সাথে কমছে তাপমাত্রাও।
কুয়াশা ঘেরা থাকে সারাদিন। দেখা মেলে না সূর্যের। আবহাওয়ার এই বৈরী আচরনে কর্মজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনে নেমে এসেছে স্হবিরতা। হাটে বাজারে মানূষ জন কম। বেচা-কেনা কম থাকায় দোকানীরাও দ্রুত ফিরে যায় বাসায়।
শেষ বিকেলে জনশুন্য হয়ে পড়ে রাস্তাঘাট। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে কুয়াশার ঘনত্বের সাথে নির্জনতা বাড়তে থাকে চারপাশে। রাতের আঁধারে কানে আসে বৃষ্টির মত গাছের পাতা ও টিনের চালায় টুপ টুপ ঝরে পড়া শিশিরের শব্দ।
কম তাপমাত্রার আবহাওয়ার সাথে হিমালয়ের হিমেল হাওয়া মিলেমিশে বাড়িয়েছে ঠান্ডার তীব্রতা। মাঘের শীতে টন টন করছে মানুষের হাত পা। একটু উষ্ণতার খোঁজে কেউ জ্বালিয়েছে আগুনের কুন্ডলী। কেউ শরীরে বাড়তি কাপড় জড়িয়ে উষ্ণতা নেয়ার চেষ্টা করছে। বাড়তি কাপড় কেনার সামর্থ্য না থাকায় কষ্টে দিনাতিপাত করছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।
অটো চালক হামিদুল জানান, অটো নিয়ে রাস্তায় বের হইছি কিন্তু যাত্রী পাচ্ছি না। কয়েকদিন থেকে অটো মালিকের প্রতিদিনের জমার টাকা রোজগার করতে পারছি না। পরিবারের জন্য খাবার কিনতে কষ্ট হচ্ছে।
তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশায় আলু, মরিচ সহ বিভিন্ন সবজির ফলন কমে যাওয়ার আশংকা করছেন চাষীরা।
উপজেলার চরভূরুঙ্গামারী গ্রামের কৃষক শফি উদ্দিন জানান,তীব্র শীতে আমার ক্ষেতে লাগানো আলু,মরিচ,লাউ সহ বিভিন্ন সবজির গাছ কুকড়া লেগেছে স্প্রে করেও কাজ হচ্ছে না।
কুড়িগ্রাম কৃষি ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন কুড়িগ্রামে আজকের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়ার্স। আবহাওয়ার এ অবস্থা আগামী ৩ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত থাকার সম্ভবনা আছে।
কনকনে ঠান্ডায় কষ্টে পড়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা। ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) সাদ্দাম হোসেন জানান, ‘প্রচণ্ড ঠান্ডায় শীত জনিত রোগ বালাই বেড়েছে। প্রায় দ্বিগুণ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন। যার মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, এ্যাজমা ও বৃদ্ধরা সিওপিডি, নিউমোনিয়া, এ্যাজমা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।