|| শান্তা মারিয়া ||
‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’। জর্জ ফ্লয়েড-এর এই উক্তিতে ধ্বনিত হচ্ছে মানবতার কান্না। এই কান্নার রং কি কালো? এই কান্না কি ভেসে আসছে আফ্রিকার অন্তঃস্থল থেকে? সেই যখন গাম্বিয়ার কিশোর কুন্তা কিন্তেকে পশুর মতো খাঁচায় বন্দী করে নিয়ে আসা হয়েছিল তার জন্মভূমির উদার প্রান্তর ও সবুজ শস্যক্ষেত থেকে। স্বাধীন মানুষকে অপহরণ, তাকে শিকলে বেঁধে জাহাজবোঝাই করে ভেড়ার পালের মতো নিয়ে আসা হয় এক নতুন দেশে। সেখানে তার একটাই পরিচয়-দাস। পালটে ফেলা হয় তার নাম। সে আর গ্রামের প্রাণবন্ত ছেলে কুন্তা কিন্তে নয়। তার নাম টোবি। সে একজন ক্রীতদাস। মালিক বদল হলে কিংবা চাইলে আবারও বদলে যেতে পারে তার নাম। তাকে যে কোন শ্রমে বাধ্য করা যায়। রাজি না হলে বা মালিকের ইচ্ছা হলে অনায়াসে উপড়ে নেয়া যায় তার চোখ, ফুটন্ত তেলে জীবন্ত সিদ্ধ করা যায় তাকে, তার দেহে গরম লোহা দিয়ে চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয়। তার স্ত্রী, সন্তান বলে কিছু নেই। স্টাড হর্সের মতো তাকে বাধ্য করা হয় তারই মতো অন্য এক কৃষ্ণাঙ্গ নারীর সঙ্গে সঙ্গমে। সেই নারীরও একটিই পরিচয় ‘ক্রীতদাসী’। আর তাদের জন্ম নেয়া সন্তানগুলোকে পশুর মতোই বিক্রি করে দেয়া হয় দাসহাটে। এই হচ্ছে বর্ণবাদের আসল চেহারা। যেখানে একজন মানুষ শুধুমাত্র তার গায়ের রঙের জন্য পশু এবং প্রয়োজনে পশুর চেয়ে অনেক বেশি ঘৃণ্য হিসেবে বিবেচিত।
১৯৭৬ সালে প্রকাশিত অ্যালেক্স হ্যালির রুটস: দ্য সাগা অফ অ্যান আ্যামেরিকান ফ্যামিলি উপন্যাসে মানবতার সেই দীর্ঘশ্বাস শোনা যায়। উপন্যাসটি প্রকাশের পর বিশ্ব সাহিত্য ভুবন স্তব্ধ হয়ে প্রত্যক্ষ করে অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতকে আফ্রিকা থেকে বন্দী করে আনা স্বাধীন মানুষদের দাস হয়ে যাওয়ার অবিশ্বাস্য উপাখ্যান। তাদের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতনের দলিল এই উপন্যাসটি। অ্যালেক্স হ্যালির পরিবারের নিজস্ব ইতিহাস এই কাহিনী। এখানে আফ্রো-আমেরিকান পরিবারের প্রজন্মান্তরের কাহিনী। ১৭৬৭ সাল থেকে যার বিস্তার বিংশ শতকের সত্তরের দশক পর্যন্ত। উপন্যাসটি বিশেষ পুলিৎজার তো জয় করেই, সেইসঙ্গে এটি আমেরিকান সাহিত্যের একটি ক্ল্যাসিক হিসেবেও গণ্য।
আচ্ছা এতো গেল অতীতের ঘটনা। কিন্তু বিংশ শতকেই কি পালটে গিয়েছিল সব? মনে পড়ছে হারপার লির কালজয়ী উপন্যাস ‘টু কিল আ মকিং বার্ড’ এর কথা। এটাও অনেকটা বাস্তব ঘটনার ভিত্তিতেই লেখা। ১৯৬০ সালে প্রকাশিত এই উপন্যাসে বলা হয়েছে উনিশশ ত্রিশের দশকের একটি ছোট্ট, আপাত শান্তিপূর্ণ কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দায় কিছুটা বিপর্যস্ত মফস্বল শহরের গল্প। আপাত শান্তিপূর্ণ কারণ এ শহরে শ্বেতাঙ্গরা বেশ শান্তিতেই থাকে। আর কৃষ্ণাঙ্গ? তারা আবার মানুষ নাকি? এ শহরে এক শ্বেতাঙ্গ তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ আনে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক টম রবিনসনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ সেখানে বিচারের আগেই যে সে দোষী হয়ে পড়বে, সাদা বাসিন্দাদের জনরোষের শিকার হবে সেকথা তো বলাই বাহুল্য। কৃষ্ণাঙ্গ টমের পক্ষে দাঁড়ানো আপোষহীন আইনজীবী অ্যাটিকাস ফিনচের উপরেও সেই ঘৃণার বর্ষণ ঘটে। যদিও টম ছিল নির্দোষ তবুও তাকে পাঠানো হয় কারাগারে। সেখান থেকে পালাতে গেলে তাকে গুলি করে হত্যাও করা হয়। পলায়নপর বন্দী যদি হয় শ্বেতাঙ্গ তাহলে তার পায়ে গুলি করা হয় আর বন্দী যদি কৃষ্ণাঙ্গ হয় তাহলে তাকে গুলি করা হবে প্রাণ হরণের জন্যই।
শেষ পর্যন্ত অ্যাটিকাস ফিনচ অবশ্য তার আইনি লড়াই চালিয়ে যান এবং মৃত টম রবিনসনকে নির্দাষ প্রমাণিত করে বর্ণবাদের কুৎসিত চেহারাটা উন্মোচন করেন সকল বাধাবিপত্তি ও পরিবারের উপর হামলা সত্বেও।
পুলিৎজার পুরস্কার পাওয়া এই উপন্যাসটিকে বলা হয় বর্ণবাদ বিরোধী সাহিত্যের কাতারে অন্যতম সেরা সৃষ্টি এবং বিংশ শতাব্দিতে আমেরিকান সাহিত্যের একশ শ্রেষ্ঠ উপন্যাসের একটি। অ্যাটিকাস ফিনচ হয়ে ওঠেন মানবতাবাদী বর্ণবাদবিরোধী মানুষের প্রতীক।
বিংশ শতকেও আমেরিকান সমাজ কতটা বর্ণবাদী ছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় এই উপন্যাসে। ষাট ও সত্তরের দশকেও যুক্তরাষ্ট্রের অনেক স্টেটে আফ্রো-আমেরিকান বা কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য সূর্যাস্ত আইন জারি ছিল। এই আইনের বদৌলতে কোন কৃষ্ণাঙ্গ সূর্যাস্তের পর শহরের প্রাণকেন্দ্র, অভিজাত আবাসিক এলাকা, নির্ধারিত এলাকায় থাকতে পারবে না। তাকে কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য নির্দিষ্ট স্থানে থাকতে হবে। তাদের জন্য আলাদা স্কুল, বিভিন্ন স্থানে আলাদা জলের কলের ব্যবস্থাও ছিল। ‘ডগস অ্যান্ড ব্ল্যাকস আর নট অ্যালাউড’ কোন মধ্যযুগের গল্প নয়। বরং সুসভ্য বিশ শতকের রূঢ় বাস্তব। মার্ক টোয়াইনের ‘অ্যাডভেঞ্চার অব টম সয়্যার’, হ্যারিয়েট বিচার স্টো-র বর্ণবাদ বিরোধী উপন্যাস ‘আংকেল টমস ক্যাবিন’ পড়ে কৃষ্ণাঙ্গ ক্রীতদাসের দুঃখে যারা অশ্রুপাত করেছে বাল্যকালে, তারাও কোন কৃষ্ণাঙ্গের উপর ক্ষেপে গেলে ‘ডার্টি নিগার’ বলতে দ্বিধা করেনি। আংকেল টমস ক্যাবিন প্রকাশিত হয় ১৮৫২ সালে। এর একশ বছর পরেও পঞ্চাশের দশকে আমেরিকার বিভিন্ন স্টেটে কৃষ্ণাঙ্গ কিশোর, তরুণকে বিনা অপরাধে শুধু কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ার কারণে পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটে পুলিশের হাতেই।
ও হেনরির ‘আ মিউনিসিপাল রিপোর্ট’ গল্পে ন্যাশভিল শহরের শ্বেতাঙ্গ লেখক এবং অসহায় নারী অ্যাজেলিয়া অ্যাডায়ার আর তার বাবার আমলের কৃষ্ণাঙ্গ ভৃত্য ও একমাত্র বন্ধু ঘোড়াগাড়ি চালকের সম্পর্ক, তাদের অন্তঃশীলা ভালোবাসার কথা যত মর্মস্পর্শী ভাবেই ফুটিয়ে তোলা হোক না কেন সমাজে এ ধরনের সম্পর্ক ছিল অমার্জনীয়।
এমনকি ১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘গেজ হুজ কামিং টু ডিনার’-এ খুব সার্থকভাবে তুলে ধরা হয়েছে উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণী থেকে আসা শ্বেতাঙ্গ নারী এবং তার কৃষ্ণাঙ্গ প্রেমিকের গল্প। যেখানে একজন কৃষ্ণাঙ্গ উচ্চশিক্ষিত, সম্মানিত পেশাজীবী হলেও শুধুমাত্র গাত্রবর্ণের কারণে শ্বেতাঙ্গ নারীর সঙ্গে তার সম্পর্ক পরিবারে রীতিমতো বিপর্যয় নিয়ে আসে।
কৃষ্ণাঙ্গদের বোঝাতে ‘নিগ্রো’ শব্দটির ব্যবহার বেশ প্রাচীন। ইংরেজি ভাষায় শব্দটা বেশ জোরে শোরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে ১৪৪২ সাল থেকেই। যখন পর্তুগিজরা প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় পদার্পণ করে তখন স্থানীয় বান্টু জনগোষ্ঠিকে তারা ‘নিগ্রো’ শব্দটি দিয়ে চিহ্ণিত করে। আফ্রিকার সব অধিবাসীকে কিন্তু নিগ্রো বলা হয়নি। উত্তরের অধিবাসীদের ইজিপশিয়ান ও মুর বলা হয়েছে। মুরদের সঙ্গে পরিচয় আরও আগে। যখন স্পেনে আলহামব্রা প্রাসাদ এবং উত্তর আফ্রিকানদের সাম্রাজ্য স্থাপন হয় তখন থেকেই মুররা(যারা মূলত ছিল মুসলিম) ইউরোপীয় সাহিত্যে জায়গা করে নেয়। শেকসপিয়ারের বিখ্যাত নাটক ওথেলোর নায়ক ওথেলো ছিলেন একজন মুর। নৃতত্বে নিগ্রো বা নিগ্রোয়েড শব্দটি বিশেষ নৃগোষ্ঠির মানুষকে চিহ্ণিত করতে ব্যবহার করা হতো।
সপ্তদশ, অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতকে আফ্রিকা থেকে শিশু কিশোর ও যুববয়সী অসংখ্য নরনারীকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় আমেরিকায়। তাদের দাস হিসেবে আটকে রেখে জোর করে শ্রমিক বানানো হয়। এরা মূলত ছিলেন কৃষিদাস এবং গৃহদাস। আর স্বাধীন মানুষকে গোলামির জিঞ্জির পরানোর এই ব্যবস্থাটি ছিল সম্পূর্ণ বৈধ ও আইনসিদ্ধ। এমনকি আমেরিকা স্বাধীন হওয়ার পরও তাদের দাসত্ব ঘোচেনি। সভ্যতার কাণ্ডারি বলে বিবেচিত তথাকথিত সুসভ্য শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানরা এই দাসপ্রথাকে বৈধতা দিয়েছে এই সেদিন পর্যন্ত। আমেরিকার গৃহযুদ্ধর মূল কারণও ছিল এই দাসপ্রথার প্রশ্নেই। এসব কথা তো ইতিহাসের পাঠক মাত্রেরই জানা আছে। বলছিলাম ‘নিগ্রো’ শব্দটির কথা। দাসপ্রথার আমলে এবং তার পরেও অনেক বছর নিগ্রো কথাটি গালাগাল অর্থে নয় বরং কৃষ্ণকায়দের চিহ্নিত করতে ব্যবহার করা হতো। তখন গালি হিসেবে ব্যবহার হতো ব্ল্যাক, ব্ল্যাকি, নিগার ইত্যাদি শব্দ। বিখ্যাত সমাজ সংস্কারক ও কৃষ্ণাঙ্গ মানবাধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র তার বিখ্যাত ভাষণ আই হ্যাভ আ ড্রিম- এ নিজেকে ও কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠিকে নিগ্রো শব্দেই অভিহিত করেছেন(১৯৬৩ সালে)।
পরবর্তি কালে আমেরিকায় নিগ্রো শব্দটি দাস ও আপমানসূচক হয়ে ওঠে। বর্তমানে ব্যবহৃত হয় ‘আফ্রো-আমেরিকান’ শব্দ। ইতিহাসের নির্মম কৌতুক হলো, আফ্রো-আমেরিকান, নেটিভ- আমেরিকান(আদিবাসী আমেরিকান, যাদের আগে বলা হতো রেড ইন্ডিয়ান) এবং এশীয়-আমেরিকান থাকলেও ইউরো-আমেরিকান বলে কোন শব্দ নেই। কারণ ধরেই নেওয়া হচ্ছে আমেরিকার অধিবাসী মানেই শ্বেতাঙ্গ। একটু অপ্রাসঙ্গিক হলেও বলি আভিবাসীদের বিষয়টিও এ্কই রকম কৌতুকের। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পসহ আমেরিকার শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠির সকলেই এই মহাদেশে কয়েক প্রজন্ম আগে পরে ইউরোপ থেকে আসা অভিবাসী বা ইমিগ্র্যান্ট। মেক্সিকো থেকে আসা অভিবাসী আর যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান রাষ্ট্রপতির মধ্যে মূল পার্থক্য হলো তারা বা তাদের পূর্বপ্রজন্ম কয়েক শতাব্দির ব্যবধানে এই বিশাল ভূভাগে পা রেখেছেন।
যে আমেরিকান নাগরিকরা নাৎসি বাহিনীর প্রধান অ্যাডলফ হিটলারের ইহুদি নিধন ও বিরোধিতাকে বর্ণবাদী বা রেসিস্ট বলে নিন্দায় মুখর তাদেরই দেশে কিন্তু ক্লু ক্লুকস ক্ল্যানের মতো কৃষ্ণাঙ্গ হত্যাকারী ও চরমপন্থী বর্ণবাদী সংগঠন সগৌরবে বিরাজ করেছে। এমনকি এই ধরণের সংগঠন গোপনে তাদের কার্যক্রম চালিয়েছে গত শতক পর্যন্ত। ১৯৬৮ সালে মানবতাবাদী মহান নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে(মাত্র ৩৯ বছর বয়সে) গুলি করে হত্যা আর আজকের জর্জ ফ্লয়েডকে পুলিশের শ্বাসরোধে হত্যায় খুব বেশি পার্থক্য নেই।
বর্ণবাদের ভণ্ডামিটা খুব স্পষ্ট বোঝা যায় যখন বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে সেবার রানী কৃষ্ণাঙ্গী বিলকিসকে কখনও নিগ্রো নামে অভিহিত করা হয় না। এমনকি ভার্জিন মেরি ও তাঁর পুত্র প্রোফেট জেসাসকে জলপাই গাত্রবর্ণ ও কালো চুলের অধিকারী নাজারাথের বাসিন্দার মতো না এঁকে যতদুর সম্ভব ইউরোপীয় শ্বেতাঙ্গ ও সোনালীঘেঁসা বাদামি চুলের বানানোর আপ্রাণ প্রচেষ্টা চলে। তারমানে বর্ণবাদের প্রকোপে প্রোফেটও হয়ে পড়েন শ্বেতাঙ্গ।
এক জাতি বা বর্ণের মানুষ অন্য বর্ণের চেয়ে শ্রেষ্ঠ এই ভ্রান্ত ও কুৎসিত চিন্তাধারাটাই কি পরিত্যক্ত হওয়া কাম্য ছিল না অনেক বছর আগে? আর্য, সেমেটিক, মঙ্গোলয়েড, নিগ্রোয়েড, ককেশীয় এসব শব্দ নৃতত্বের গবেষকদের জন্য জরুরি হতে পারে। কিন্তু মানুষকে কি বিচার করা যায় তার রং কালো, সাদা না হলুদ তার ভিত্তিতে? ‘কালো আর ধলো বাহিরে কেবল, ভিতরে সবারি সমান রাঙা’ কিংবা ‘নানান বরণ গাভীরে ভাই এক্ই বরণ দুধ, জগত ভরমিয়া দেখলাম একই মায়ের পুত’, বাঙালি কি বহু আগেই একথা উচ্চারণ করেনি?
জর্জ ফ্লয়েডের ঘাড়ে পা চেপে তাকে শ্বাস রুদ্ধ করে হত্যা প্রমাণ করে ‘উই আর সেম বোট ব্রাদার’ একটি ক্লিশে মিথ মাত্র। বাস্তবে আমেরিকা এখনও বর্ণবাদের শাঁসযুক্ত ও বাইরে মানবতার খোসায় মোড়া একটি বিষাক্ত ফল।
এই বিষবৃক্ষ গণমানস থেকে চিরতরে উৎপাটনে অনেক হারপার লি, অনেক অ্যাটিকাস ফিনচ চাই। তাদের চাই সাহিত্যে, সংগীতে ও শিল্পকলায়।