নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ডাকা বিএনপির মহাসমাবেশে সরকার সম্পুর্ণ মাষ্টারপ্ল্যান করে হামলা করিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে পুলিশ ও বিএনপির মধ্যে সংর্ঘষ হয়। ৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। এসময় একজন পুলিশ ও একজন যুবদল কর্মী নিহত হয়।
এক বিবৃতিতে বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ বিএনপির পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের পরিকল্পিত তান্ডব ও সশস্ত্র হামলা নজিরবিহীন ও ন্যাক্কারজনক। বিএনপির মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করার পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতাদের এবং পুলিশের বক্তব্যেরই প্রতিফলন বিএনপির কর্মসূচিতে সশস্ত্র এবং রক্তাক্ত আক্রমণ। বেশ কয়েকদিন ধরে পুলিশের গণগ্রেপ্তার, হামলা এবং হমকি ধামকি এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের লাঠি হাতে বিএনপির মহাসমাবেশ প্রতিহতের ঘোষণারই বাস্তবায়ন হয়েছে আজ।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীদের মহাসমাবেশে যোগদানে বিরত রাখতে গ্রেপ্তার ও মামলার হিড়িক চালিয়ে চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে আজ যখন দেখলো সকালেই মহাসমাবেশে মানুষের ঢল নেমেছে, মহাসমাবেশ কাকরাইল ছাড়িয়ে পশ্চিমপার্শ্বে কাকরাইল মসজিদ পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে তখন পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা লাঠি নিয়ে, অস্ত্র নিয়ে বিএনপির লোকদের উপর হামলা করে। তারা গুলি করতে করতে রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ছুড়তে ছুড়তে নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয় পর্যন্ত চলে আসে।
মির্জা ফখরুল বলেন, পুলিশের টিয়ারশেল ও গুলির ঘটনায় মঞ্চে থাকা সিনিয়র নেতারাও মারাত্বক আঘাতপ্রাপ্ত ও আহত হন। এ সময় অসংখ্য নেতা-কর্মীও আহত হয়েছে। পুলিশের গুলিতে মুগদা থানা যুবদল নেতা শামীম নিহত হয়েছেন। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, দলের ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জিলানি, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহসহশ্রাধিক নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য গণমাধ্যমের কর্মী। তাদের রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজ সকাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনশতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত কয়েকদিনে পুলিশ বিএনপির দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। বাস, ট্রেন ও লঞ্চ পারাবার বন্ধ করে দিয়ে যখন সরকার আমাদের মহাসমাবেশ ঠেকাতে পারেনি। তারা যখন দেখছে বাধা উপেক্ষা করে মহাসমাবেশে লাখ লাখ লোক যোগ দিয়েছে তখন তারা পরিকল্পিতভাবে হামলা করে আমাদের সমাবেশ পন্ড করে দিয়েছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার সম্পুর্ণ মাষ্টারপ্ল্যান করে বিএনপির সমাবেশে হামলা করিয়েছে। আমি বিএনপির সমাবেশে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাাচ্ছি।
আটককৃতদের মুক্তি দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। আহতদের সুস্থতা কামনা ও আগামীকালের হরতাল সর্বাত্বকভাবে সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।