কলকাতা: ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে ‘বাংলার গাদ্দার’ বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দাবি, ছেলে মিমোকে বাঁচাতে ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) যোগ দিয়েছেন ‘ফাটা কেষ্ট’ খ্যাত মিঠুন।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজ্যের রায়গঞ্জে তৃণমূলের জনসভায় মিঠুনের ব্যাপারে এসব কথা বলেন মমতা।
অতীতে তৃণমূলের রাজ্যসভার সংসদ সদস্য ছিলেন মিঠুন। পরে রাজ্যে চিট ফান্ড কাণ্ড প্রকাশ্যে আসতে তৃণমূল ছেড়ে দেন তিনি। দীর্ঘ সময় রাজনীতি থেকে বিরতির পর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন মিঠুন। বর্তমানে লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় এসে বিজেপির হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার তৃণমূল প্রধান বলেন, মিঠুন চক্রবর্তীকে আমি রাজ্যসভার এমপি করেছিলাম। কিন্তু জানতাম না উনি বাংলার আর একজন বড় গাদ্দার। শুধু নিজের ছেলেকে বাঁচানোর জন্য আরএসএস অফিসে গিয়ে মাথা নিচু করে দিয়ে এসেছিলেন। ছেলের ভয়ে মুম্বাইয়ের আরএসএস অফিসে চলে গিয়েছিলেন, বলে সে নাকি একজন সেবক।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সেচ্ছাসেবীরা নিজেদের সেবক বলে থাকেন।
এদিন মমতা আরও কড়া ভাষায় বলেন, যারা দো আঁশলা, যাদের আদর্শ নেই, নীতি নেই, তাদের আমি মানুষ বলে মনে করি না। যারা লড়াই করতে পারে, তাদের আমি মানুষ বলে মনে করি।
তবে শুধু বিজেপিকে নয়, এদিন কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও সরব হন মমতা। রায়গঞ্জ কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থীর বিষয়ে মমতা বলেন, বাংলায় কংগ্রেস দাঁড়িয়েছে শুধু মুসলিম ভোটে ভাগ বসাবে বলে। ওরা বিজেপির হয়ে কাজ করছে। মুসলিম ভোট ভাগ করে বিজেপিকে সুবিধা করে দিচ্ছে।
জনতার উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, জেনে রাখুন বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস একা লড়ছে। এখানে ইন্ডিয়া জোট নেই। এখানে তৃণমূল মানেই ইন্ডিয়া। কারণ, বিজেপিবিরোধী ইন্ডিয়া আমি বানিয়েছিলাম।
মমতা কড়া শব্দ ব্যবহার করলেও মিঠুনের পক্ষে সরব হয়েছে বিজেপি। দল থেকে বলা হয়েছে, মিঠুনের সম্পর্কে বাজে কথা বলা ঠিক না। তার কোনো রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, মিঠুনের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা নিয়ে কেউ কখনও প্রশ্ন তুলতে পারেনি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ ট্যাক্স পেয়ার ছিলেন। তিনি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা, সারা ভারতের মানুষের হৃদয়ে তার জন্য জায়গা আছে। রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকলে মিঠুন ভোটে লড়তেন। তার সে সম্ভাবনা যথেষ্ট আছে। মিঠুন চাইলেই তাকে প্রার্থী করা হতো। বিজেপির টিকিটে রাজ্যসভাতেও যেতে পারতেন, সেটাও না করে দিয়েছিলেন।