শিরোনাম
শুক্র. ডিসে ৫, ২০২৫

মিরপুরে বিএনপি’র সমাবেশ পণ্ড করতে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের যৌথ হামলা

উত্তরার পর এবার রাজধানীর মিরপুরে বিএনপির সমাবেশমুখী মিছিলে ফ্যাসিবাদের সহায়ক পুলিশের সহযোগিতায় জঙ্গি হামলা চালিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সন্ত্রাসীরা। আওয়ামী লীগের জঙ্গি হামলাকে সহযোগিতা করতে পুলিশ বিএনপির কর্মীদের প্রতি টিয়ার গ্যাস শেল নিক্ষেপ করে।

জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও শাওনের মৃত্যুর প্রতিবাদে রাজধানীতে বিএনপি’র ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিরপুরে সমাবেশের কর্মসূচি ছিল বৃহস্পতিবার। সমাবেশ যাতে সফল না হয় এ লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ যৌথভাবে হামলা চালায়। এসময় সমাবেশের জন্য তৈরি করা মঞ্চ ভাংচুর করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর)মিরপুরে বিএনপির কর্মসূচি শুরুর আগেই সমাবেশস্থলের আশপাশের এলাকায় লাঠিসোটা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করেন। একপর্যায়ে সমাবেশে আসতে থাকা বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায় তারা। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরাও প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে প্রায় আধা ঘণ্টা আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে নিরস্ত্র বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে।

এই সময় ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা পুলিশের সহায়তায় লাঠিসোটা হাতে ওই এলাকায় মিছিল করতে থাকেন। তারা বিএনপির সমাবেশস্থলে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেন।

স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) মিরপুর ৬ নম্বর বাজারের পশ্চিম পাশে মুকুল ফৌজ মাঠ এলাকায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করেন এবং ধাওয়া দেন। হামলায় বিএনপির অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, মিরপুরে সমাবেশ করার জন্য এরই মধ্যে নানা প্রতিবন্ধকতায় তিনবার জায়গা পরিবর্তন করা হয়েছে। সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের উপস্থিত থাকার কথা ছিল।

জানা গেছে, মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর থেকে পল্লবীর দিকে যেতে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাছাকাছি পুলিশের একটি দল বিএনপির সমাবেশমুখী মিছিলে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা লাঠিসোটা নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। জবাবে বিএনপির নেতাকর্মীরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন।

শায়রুল কবির খান বলেন, সমাবেশমুখী মিছিলে পুলিশ হামলা করেছে এবং টিয়ার গ্যাস শেল নিক্ষেপ করেছে। কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের যৌথ হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, দুপুর একটার সময় সমাবেশ করার জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি দিয়েছেন। অনুমতি পাওয়ার পর আমাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে মাইক ও অস্থায়ী স্টেজ বানানোর সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইলে আওয়ামী লীগের হয়ে পুলিশ আমাদের লোকদের উপর হামলা চালায়।

আমান উল্লাহ আমান বলেন, এ সময় পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের উপর টিয়ার শেল ও গুলি বর্ষণ করে। এতে আমাদের অনেক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ এই সমাবেশ হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীসহ আমরা সমাবেশস্থলে যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর অস্ত্রসহ হামলা চালায়।

জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, গণপরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি ও পুলিশের গুলিতে ভোলায় নুরে আলম, আবদুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জে শাওন হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশের পর ঢাকার ১৬টি স্থানে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। এখন পর্যন্ত ৪টি স্থানে সমাবেশ হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরার কামপাড়া সমাবেশেও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *