আরাকান নিউজ ডেস্ক: রোহিঙ্গা নেতা মুহিব্বুল্লাহ হত্যা মামলায় আরো দু’জন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হলেন, নুরে আলম ও হামিদ মাঝি। এ সময় আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা এক আসামি নুরে আলমকে হত্যার হুমকি দেন।
মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে সাক্ষ্যদানকালে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি আদালতের নজরে আনলে বিচারক সংশ্লিষ্ট আসামি ও তার আইনজীবীকে সতর্ক করেন।
জানা গেছে, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যায় এ নিয়ে এখন পর্যন্ত তিনজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর আগে গতকাল মুহিব্বুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবউল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম।
তিনি জানান, সাক্ষ্যদানকালে আদালতের কাঠগড়ায় দাড়িয়ে থাকা এক আসামি নুরে আলমকে হাতের ইশারায় হত্যার হুমকি দেন। সাথে সাথে তিনি বিষয়টি আদালতের নজরে আনলে বিচারক আসামি ও তার আইনজীবীকে সতর্ক করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী জানান, আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৪ আসামিকে আদালতে আনা হয়। তাদের উপস্থিতিতে নেয়া হয় মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ।
সোমবার আদালতে সাক্ষ্যদানকালে মামলার বাদি হাবিবউল্লাহ আদালতে জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে বাস্ত্যুচুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য জোরালোভাবে ভূমিকা পালন করায় সন্ত্রাসীদের এক গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে তার ভাইকে হত্যা করেছে। রোহিঙ্গারা যাতে দ্রুত তাদের দেশে ফিরে যেতে পারে এজন্য তিনি ক্যাম্পে ক্যাম্পে আন্দোলন শুরু করেন। তাদের দ্রুত স্বদেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও নানা দাবি তুলেছিলেন তিনি।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ)-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া-১-ইস্ট নম্বর ক্যাম্পের ডি ব্লকে নিজ সংগঠনের কার্যালয়ে মুখোশধারী বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ সাড়ে আট মাস তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উখিয়া থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দীন ২৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এতে সাতজনের নাম ঠিকানা সঠিক পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য আবেদন জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা।
জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার সহায়তায় বর্তমানে মুহিবুল্লাহ’র পরিবারের ২৫ জন সদস্য কানাডায় বসবাস করছেন। প্রথম দফায় ৩১ মার্চ স্ত্রীসহ ১১ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ জন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কানাডা পাড়ি জমান।