আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধ শেষ হতে না হতেই ফের নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত মিলেছে। এবার ইরান সরাসরি অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক আলোচনার ছলে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ‘প্রেস টিভি’ এক সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে, ইরানের গোয়েন্দা তথ্য মতে ওয়াশিংটনের আসল লক্ষ্য শান্তি নয়, বরং সংঘাত।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা তথ্য ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ওয়াশিংটন শান্তি নয়, যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য আলোচনা চায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি তাই হয়, তাহলে সময় নষ্ট করার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং আমরা সংঘাতের জন্য প্রস্তুতির ওপর মনোনিবেশ করব।’
প্রেস টিভির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইরানের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র নতুন আলোচনার মাধ্যমে ইসরায়েলের দুর্বলতা পুষিয়ে নিতে এবং ভবিষ্যৎ যুদ্ধে সুবিধা পেতে ইরানকে নিরস্ত্র করার কৌশল নিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেকোনো নতুন আলোচনায় অবশ্যই বাস্তবসম্মত ও গুরুতর নিশ্চয়তা থাকতে হবে। যাতে নিশ্চিত হওয়া যায়, পুরো বিষয়টি নিরাপত্তা প্রতারণার আবরণ নয়।’
তবে বুধবার (১৬ জুলাই) এক বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, ‘গত মাসের মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে অপূরণীয় আঘাত হেনেছে এবং আলোচনায় ফেরার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কোনো তাড়াহুড়া নেই।’
এ প্রসঙ্গে ইরানের কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এই নিশ্চয়তা পেতে হবে যে স্টিভ উইটকফ (ট্রাম্পের বিশেষ দূত) যেন যুদ্ধের জন্য আগুন জ্বালানোর পাত্র না হয়ে সমাধানের জন্য একজন মধ্যস্থতাকারী হন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে আরেকবার সুযোগ দিতে চাই এবং শুনতে চাই যে তাদের এই বিষয়ে কী বলার আছে এবং তাদের বাস্তবিক পদক্ষেপ কী হয়।’
এর আগে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে তেহরানকে দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছিল। কিন্তু সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই, ২২ জুন, মার্কিন বাহিনী আকস্মিকভাবে ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এই ঘটনার পর থেকে ইরান ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি গভীর সন্দেহ পোষণ করছে এবং তাদের সঙ্গে আলোচনায় যেতে অনিচ্ছুক হয়ে পড়েছে।