আরাকান নিউজ ডেস্ক: রাখাইন রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। গত কয়েক দিন ধরে সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকায় এই লড়াই তীব্রতর হয়েছে বলে জানা গেছে।
রাখাইনের বুথিডং ও মংডু এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে গত চার দিন ধরে সেখানে দুই বাহিনীর সংঘর্ষ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বলে নানা সূত্র থেকে খবর পাওয়া গেছে।
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ হোয়াইকং, হ্নীলা নাইকংছড়ি সদরের জামছড়ি সীমান্ত এলাকায় ওপারে তীব্র গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনা গেছে।
শনিবার (৩০ মার্চ) ভোরে নাইকংছড়ির ঘুনধুম সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের তিন সেনা সদস্য বাংলাদেশের বিজিবির কাছে আশ্রয় নিয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়।
তারা এখন বিজিবি রামু সেক্টরের হেফাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে এখনো তিন মিয়ানমারের সেনা সদস্য আশ্রয় নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। ইতোপূর্বে নাইকংছড়ি সীমান্ত দিয়ে আশ্রয় নেয়া ১৭৭ জন বিজিপি সদস্য নাইকংছড়ি বিজিবি হেফাজতে রয়েছে।
টেকনাফের নাফ নদীর ওপারে মংডু শহরের কাছের একটি ঘাঁটির দখল নিতে মরিয়া হয়ে লড়ছে আরাকান আর্মি।
রাখাইনে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার থেকে টেকনাফ সীমান্তের ওপারে বোমা ও মর্টার শেলের ভারী শব্দ শোনা যায়। গত দুই দিনে ও রাতে বোমা ও মর্টারের এবং গোলাগুলির শব্দ শুনা গেছে। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির শব্দ শুনা গেছে।
সেন্ট মার্টিন বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দিনভর গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন বলে জানিয়েছে।
তারা জানিয়েছে, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সারাক্ষণ রাখাইনে গোলাগুলির শব্দ শুনা গেছে। গত চার দিন ধরে এ ধরনের গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। রাখাইনের এই সংঘাতের মাঝে শাহপরীর দ্বীপের মোহনায় মিয়ানমারের একটি জাহাজ দেখা গেছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমার বাহিনীর একটি যুদ্ধ জাহাজ নাফনদের ওপারে রাখাইনের মংডুর দিকে অগ্রসর হয়।
পরে সেটি শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের ওপারে রাখাইনের পা’নিংপিংজি ও অ্যালে তেনজে নামক এলাকার মাঝামাঝি নাফনদে মিয়ানমার জলসীমায় নোঙর করে। জাহাজটি ইয়াঙ্গুন থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হয়।
শাহপরীর দ্বীপের ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ জানান, শাহপরীর দ্বীপ জেটির সোজাসুজি মিয়ানমারে একটি বড় জাহাজ দেখা যায়। জাহাজটি জেটি থেকে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। পরে জাহাজ থেকে মালামাল নিয়ে কতগুলো ইঞ্জিনচালিত নৌকা রাখাইনের বিভিন্ন এলাকার দিকে ছুটে যেতে দেখা গেছে। তবে আজ শনিবার সকাল থেকে জাহাজটি দেখা যায়নি।
কোস্টগার্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছে মিয়ানমারের জাহাজ নিজেদের জলসীমায় আসতে পারে। আগেও নিজেদের সীমানায় টহল দিয়েছে এ ধরনের জাহাজ। রাখাইনে এ ধরনের জাহাজ ভিড়লেও সেটি তাদের সীমানায় অবস্থান নিয়ে থাকে। এতে দেশের জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ছাড়া নাফনদে কোস্টগার্ড সার্বক্ষণিক সর্তক অবস্থানে রয়েছে।