গবেষক জানিয়েছেন, এই রোবট তৈরি হয়েছে সাধারণভাবেই। কম খরচে। বাজারে যে সব মেটিরিয়াল সহজলভ্য তাই দিয়েই এই রোবট তৈরি হয়েছে। তিনটি মোটর, অ্যাসিড ব্যাটারি, ট্রান্সমিটার-রিসিভার ও ইউএসবি আউটপুট আছে। এই রোবট রোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারবে। তার জন্য রয়েছে ওয়াই-ফাই কন্ট্রোলড ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ও স্পিকার। রোবট বানাতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা, সময় লেগেছে এক সপ্তাহের মতো।যান্ত্রিক মানুষ হলেও করোনা যোদ্ধা! সংক্রমণ মোকাবিলায় কোমর বেঁধে কাজ করবে। করোনা রোগীদের সেবাযত্ন করবে, খাবার-ওষুধ পৈঁছে দেবে সঠিক সময়। চিকিৎসার কাজেও সাহায্য করবে। আবার কথা কথাও বলবে। রোগীদের সুবিধা-অসুবিধা বুঝে ডাক্তারের কাছে খবর পৌঁছে দেবে। নানা কাজের কাজি এই রোবট। এর নাম তাই ‘কোভিড-১৯ ওয়ারবট’ ।করোনা রোগীদের কাছে থেকে চিকিৎসা করতে গিয়ে একের পর এক সংক্রামিত হচ্ছেন ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা। ঘন ঘন আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভিসিট করতে গিয়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে হাসপাতালের বাকি কর্মীদের মধ্যেও। সংক্রামিত রোগীদের ছোঁয়া বাঁচিয়ে তাঁদের দেখাশোনা ও চিকিৎসার জন্য তাই রোবটের কথাই ভেবেছেন বিজ্ঞানীরা। গুয়াহাটির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে রোবট তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। কেরল ও জয়পুরের কয়েকটি হাসপাতালে ইতিমধ্যেই কাজে লেগে পড়েছে যান্ত্রিক মানুষরা। উত্তর-পূর্বে এই প্রথম করোনা মোকাবিলায় রোবট বানালেন ত্রিপুরা ইউনিভার্সিটির কেমিক্যাল ও পলিমার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক হরজিৎ নাথ।
গবেষক হরজিৎ বলেছেন, “রোগীদের দেখাশোনা করা, তাদের শারীরিক অবস্থার প্রতিটি মুহূর্তের তথ্য ডাক্তার, নার্সদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে এই রোবট। ফলে ঘন ঘন ডাক্তারদের আর আইসোলেশন ওয়ার্ডে ঢুকতে হবে না। সময় ধরে খাবার ও ওষুধও রোগীদের কাছে পৌঁছে দেবে এই ওয়ারবট।”
১০-১৫ কিলোগ্রাম অবধি ওজন বইতে পারবে এই রোবট, বলেছেন গবেষক হরজিৎ। ১৫-২০ মিটারের মধ্যে চলাফেরা করতে পারবে। টানা এক ঘণ্টারও বেশি কাজ করতে পারবে। উন্নতমানের ব্যাটারি লাগানো রয়েছে এই রোবটের সিস্টেমে। এই ব্যাটারি তিন-চার ঘণ্টা চলবে।
ত্রিপুরার হাসপাতালগুলিতে এই রোবট ব্যবহারের অনুমোদন চেয়েছেন গবেষক হরজিৎ নাথ। তিনি বলেছেন, অনেক হাসপাতাল, নার্সিংহোমই এই রোবট ব্যবহারে উদ্যোগী। প্রস্তাব এসেছে উত্তর-পূর্বের অন্যান্য হাসপাতালগুলি থেকেও। পেটেন্টের জন্যও অনুমতি চেয়েছেন গবেষক।