ঋদি হক: বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের পর্যটন জেলা কক্সবাজার। এর দু’টো উপজেলা টেকনাফ ও উখিয়ায় রয়েছে ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবির। তাদের মায়ানমার থেকে জোরপুর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। ২০১৭ সালে ওই দেশের সেনাবাহিনীর অত্যাচার, হত্যা, ধর্ষণ অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী টেকনাফ ও উখিয়া এলাকায় এসে আশ্রয় নেয়।
বর্তমানের ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বসবাস ৩৪টি শিবিরে। ঘিঞ্জি পরিবেশ। শরণার্থী জীবন বলতে যা বোঝায়। বলতে গেলে মানুষের বারুদঘর এক একটি রোহিঙ্গা শিবির। সেখানেই হানা দিয়েছে করোনা। এরই মধ্যে মারা গিয়েছে ১৩ জন। আর আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ৯১৩। করোনা রুখতে ১২ দিনের লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে ৫টি শিবিরকে।
রোহিঙ্গা শিবিরে হঠাত্ করেই করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়া ত্রাণ ও সেবার সঙ্গে জড়িত সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শিবির সূত্রের খবর, ৩৪টি শিবিরের ৪১ হাজার ৪৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৭৪০ জন উখিয়ায় এবং টেকনাফ শিবিরে ১৭৩ জন।
১৪ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত এক সপ্তাহে শিবিরগুলোতে করোনা-শনাক্তর সংখ্যা ছিল ১৬৫ জন। ১৯ ও ২০ মে ২ দিনে আরও ৯০ জন শনাক্ত হয়। মারা গিয়েছেন ১৩ জন। করোনা ছড়ানোয় উখিয়ার ২ ডব্লিও, ৩, ৪, ১৫ এবং টেকনাফের ২৪ নম্বর এই ৫টি শিবিরে ১২ দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার কক্সবাজার শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের স্বাস্থ্য সমন্বয়ক ডা. আবু তোহা জানান, হঠাত্ করে শিবিরগুলোতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউন জারি করা হয়েছে। লকডাউন শেষ হবে ৩১ মে। এ সময় ক্যাম্পগুলোতে খাদ্য সরবরাহ, চিকিত্সাসেবা, করোনা সচেতনতা সম্পর্কিত ওয়াশ কর্মসূচি, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ক্যাম্পের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, পুষ্টি কার্যক্রম-সহ অতি জরুরি সেবা ছাড়া সব কাজ বন্ধ থাকবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া শিবিরের কোনো বাসিন্দাকে বাইরে যেতে দেওয়া হবে না।
লকডাউন বাস্তবায়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করবে। রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাই কমিশন (ইউএনএইচসিআর)।