আদালত ডেস্ক: শেখ মুজিবুর রহমান, আবদুল হামিদ ও শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে ফেসবুক লাইভে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগ ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানায় মনির খান মাইকেল (৩২) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সহকারী পরিদর্শক (এসআই) তপু সাহা। পরদিন ২৩ জানুয়ারি তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ মামলায় মাইকেলের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২০ জুন অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত তাঁর জামির মন্জুর না করে জেল হাজতে রাখা হয়। গত মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের ডিভিশনাল সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে আসামি মনির খান মাইকেলের মামলার ধার্য তারিখ ছিল। পুলিশ আসামিকে আগেই এনে আদালত কক্ষের ডকে রেখেছিল। তিনি স্যান্ডেল খুলে প্রবেশ করেছিলেন; কিন্তু কোনো এক ফাঁকে দুটি স্যান্ডেল হাতে নিয়ে একটার পর একটা বিচারককে লক্ষ্য করে ছুড়ে মারেন। তার ছোড়া দুই পাটি জুতা বিচারকের প্রায় গা ছুঁয়ে মাথার পেছনের দেয়ালে আঘাত করে। ওই সময় তিনি গালাগাল দেন এবং তাকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দ্রুত পুলিশ ও আইনজীবীরা ছুটে এসে ওই আসামিকে নিবৃত্ত করেন।
অভিযুক্ত মনির খান মাইকেলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায়। পুলিশের অভিযোগপত্রে তাকে বিএনপি কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিচারককে জুতা ছুড়ে মারার পর তাকে আদালত কক্ষ থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম আদালতের পুলিশ পরিদর্শক জাকির হোসেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, বিচারক এজলাসে বসার সঙ্গে সঙ্গে তাকে লক্ষ্য করে স্যান্ডেল নিক্ষেপ করেন আসামি মনির। তবে তা বিচারকের গায়ে লাগেনি। তিনি বসা অবস্থায় থাকার কারণে স্যান্ডেল মাথার ওপর দিয়ে চলে গেছে। বিচারক শুনানি শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই মনির এ ঘটনা ঘটান। ভাগ্যক্রমে কোনোমতে আঘাত এড়াতে সক্ষম হন বিচারক। এ ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় নেটিজেনরা বলছেন, এই জুতা গোটা বিচার বিভাগের কপালে মারছে, যারা একটা জুলুমবাজ অবৈধ সরকারের চামচা হয়ে কাজ করছে, যারা মিথ্যা ও গায়েবী মামলায়ও জামিন দেয় না, বার বার রিমান্ড দেয় সম্মানী লোকদের। কেবল তো জুতা মারছে- এরপরে এই জালিম পুলিশ বিচারকদের জনগণ যে কি ট্রিটমেন্ট দিবে, তা সারা দুনিয়া দেখবে।