করোনাভাইরাসের জন্য প্রায় সাড়ে ৭ মাস পর বন্ধ থাকার পর অবশেষে ফের রাজ্যে চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। তবে আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় নয়, আগামী ১১ নভেম্বর বুধবার থেকে প্রতি দিন ১৮১ জোড়া ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে রেল ও রাজ্য প্রশাসনের বৈঠকে। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বৈঠকে বসেছিল দু’পক্ষ। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
গত ২২ মার্চ জনতা কার্ফুর ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরের দিন থেকেই বন্ধ করে দওয়া হয় লোকাল ট্রেন পরিষেবা। কিছু স্পেশ্যাল ট্রেন, স্টাফ স্পেশ্যালের মতো ট্রেন চালু হলেও এখনও লোকাল ট্রেন চালু হয়নি। বাস, মেট্রো-সহ অধিকাংশ যানবাহন চালুর পর অনেকেই মনে করছিলেন লোকাল ট্রেন চালু হতে পারে এ বার। কিন্তু কবে থেকে চালু হবে, কী ভাবে চালানো হবে, তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে রেল ও রাজ্য-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মধ্যে। অবশেষে বৃহস্পতিরারের বৈঠকে লোকাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
জানা গিয়েছে, প্রতিদিন মোট ১৮১ জোড়া লোকাল ট্রেন রাজ্যে চালানো হবে। এর মধ্যে শিয়ালদহ ডিভিশনে চলবে ১১৪ জোড়া ট্রেন। হাওড়া ডিভিশনে ৫০ জোড়া। বাকি ট্রেনগুলি খড়্গপুর ডিভিশনে চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে খবর। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনের সংখ্যা কমলেও তার জন্য নতুন টাইম টেবল নয়, ট্রেন চলবে পুরনো সময়সূচি অনুযায়ীই।
লকডাউনের আগে স্বাভাবিক অবস্থায় শুধুমাত্র হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনেই প্রতিদিন চলত প্রায় দেড় হাজার লোকাল ট্রেন। এ ছাড়া মেল, এক্সপ্রেস, সুপার ফাস্ট, স্পেশ্যাল ট্রনের জন্য হাওড়া-শিয়ালদহ স্টেশনে থাকত বিরাট জনসমাগম। করোনার সংক্রমণ এড়িয়ে কী ভাবে স্টেশনের ভিড় সামলানো যাবে, সে সব আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হবে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া যাত্রীদের ট্রেনে ওঠানামা, ভিতরে বসা বা দাঁড়ানোর বন্দোবস্তই বা কী ভাবে করা হবে, সে নিয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
এই সিদ্ধান্তের আগে থেকেই অবশ্য় হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশনে স্টাফ স্পেশালে উঠতে হুড়োহুড়ি চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। তার জেরে গত ৩১ অক্টোবর ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে যায় হাওড়া স্টেশনে। যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে বাধা দেওয়ায় ওই দিন ব্যাপক গন্ডগোল হয়। যাত্রীদের উপর লাঠিচার্জ করে রেলপুলিশ, এমন অভিযোগও উঠেছিল। বৃস্পতিবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ দিন হাওড়া স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, আরপিএফ এবং রেলপুলিশের কর্মীরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁদের সামনে দিয়েই জনস্রোত। কাউকে আটকাচ্ছেন না তাঁরা। প্রশ্ন করায় তাঁদের বক্তব্য, এই যাত্রীদের আটকানোর কোনও নির্দেশ তাঁদের কাছে নেই।