লণ্ডন, ১৮ ডিসেম্বর- আওয়ামীলীগের ‘এতিম গ্রুপ’ খ্যাত ‘এটিম গ্রুপ’ এর সারাদেশে পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় হত্যা গুপ্ত হত্যার আহবানের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে জুম ভিডিও মিটিংয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট অমি রহমান পিয়াল, সুগুপ্ত এবং শরিফ আজাদ ওরফে আইজুকে কথা বলতে দেখা গেছে। এরা সরাসরি পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় হত্যা গুপ্ত হত্যার আহবান জানাচ্ছে ওদের লোকদের। কিভাবে কি করতে হবে সেটির দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন ওপেন।
মূলত অমি রহমান পিয়ালের বক্তব্যের ৪২ সেকেন্ডকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠেছে। যেখানে ওই তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আমাদের জয় বাংলার এক্সটেনশন হতে হবে ওই রকম, দালালদের হত্যা করা।
যে লোকগুলো টেক ব্যাক বাংলাদেশ বলে ইস্ট পাকিস্তান বা ৫৪ বছর আগে নিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। দ্যাট ইজ, খুঁজে খুঁজে; প্রতিটা গ্রাম-মহল্লায় তাদের হত্যায় একটা মিশন হওয়া উচিৎ। দ্যাট মিনস ম্যাক এ মুক্তিযোদ্ধা। এই মুক্তিযুদ্ধের প্রথম কলেমা হচ্ছে জয় বাংলা।
ফেসবুকে ভিডিওটি শেয়ার করে প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে অনেককে। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ইলোরা জামান লিখেছেন, আমি বলে দিচ্ছি এরা কিন্তু করবে, করে দেখাবে। এই গ্রুপ যখন ব্লগে শাহবাগের সূচনা করেছিলো তখন অনেকে ভাবতেও পারেনি শাহবাগ সত্যি সত্যি হবে৷ কেউ সিরিয়াসলি নেয়নি। পরে কি হয়েছে সেটি সবার জানা। সুতরাং ওদের কথাকে লাইটলি নেবেন না। সরকারের উচিৎ ওরা যেসব দেশে থাকে সেসব দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এই ভিডিও এবং আগে যে গেরিলা বাহিনী ফর্মের ভিডিও ছেড়েছিলো সেগুলো এভিডেন্স হিসেবে পাঠিয়ে ব্যাবস্থা নিতে বলা। দেশে থানায় থানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে দিন এই ব্যাপারে। এলাকাবাসী যেখানে জয়বাংলা লেখা দেখবেন, বুঝে নেবেন এখানে আপনার জানের হুমকিদাতা আছে, পটেনশিয়াল সম্ভাব্য খু/নী আছে৷ সন্দেহজনক কাওকে দেখলে ব্যবস্থা নিন। জায়গায় জায়গায় সিসিটিভির সংখ্যা বাড়ান ইমিডিয়েটলি। ঐ গ্রুপের ভিডিওর মন্তব্যে দেখুন দেশ থেকে প্রচুর আওয়ামী নেতা কর্মী নিজের আইডি দিয়েই এই কাজ করার অঙ্গিকার করছে। এদের খোঁজ নিন, চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিন। বড় কিছু ঘটবার আগেই দ্রুত এদের ব্যবস্থা নিন। খুব বেশি কঠিন কাজ নয় এটি। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
ফারজানা মাহাবুব লিখেছে, ‘ফাসিস্ট আওয়ামী লীগের পা চাঁটা দালাল অমি পিয়াল প্রকাশ্যে অ্যাক্টিভিস্টসদেরকে খুঁজে খুঁজে খুন করার মিশনের কথা বলছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সো ফার ৩ জন অ্যাক্টিভিষ্ট স্টুডেন্টসকে খুন করা হয়েছে। অমি পিয়াল, নিঝুম মজুমদার, আরিফ জেবতিং গং-রা যা বলছে, তারা তা করছে। খুঁজে খুঁজে একটা একটা করে জুলাই অ্যাক্টিভিস্টসদের খুন করছে। জুলাই অ্যাক্টিভিস্টরা জিন্দা শহীদ, তারা খুন হওয়াকে ভয় পায় না, কিন্তু তাই বলে তারা বানে ভেসে আসা শেওলা না যে যার ইচ্ছা সে তুলে তাদের ফেলে দিবে। জুলাই অ্যাক্টিভিস্টসরা ছিলো, আছে বলেই বাংলাদেশ আছে। বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রত্যেক জুলাই অ্যাক্টিভিস্টকে বাঁচাতে হবে।’
হুসাইন রিয়াদ লিখেছেন, ‘জয় বাংলা বলে সিরিয়াল কিলিংয়ের ঘোষণা দিয়েছে অমি পিয়াল। সারা দেশে এখন পর্যন্ত নিহত ৪ জন। গত ১৬ বছরে হওয়া সকল হত্যাকাণ্ডের বিচারের পাশাপাশি অতি দ্রুত জঙ্গিলীগের রাজনীতি এই দেশে চিরতরে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
মেসবাহুল বরাত লিখেছেন, ‘বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে তিন ছাত্রকে কুপিয়ে মারলো তাদের হত্যার দ্বায় স্বীকার করে নিচ্ছে অমি পিয়াল, সাদ্দাম হোসেনরা। শুধু তাই নয়, প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছে গ্রামে গঞ্জে খুঁজে খুঁজে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের হত্যা করবে! ইন্টেরিম গভমেন্ট, বিএনপি, জামায়াত এদের সবার চিন্তায় আওয়ামী লীগের চিহ্নিত খুনিদের ব্যাপারে উদারতা দেখে দিন দিন বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি।’
আহমেদ জুনায়েদ লিখেছেন, ‘অমি পিয়াল লিটরেলি গুপ্ত যুদ্ধের ঘোষণা দিলো। জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে পাড়া মহল্লায় লিস্ট করে বিপ্লবীদের হত্যা করতে বললো। চট্টগ্রামের ক্যাডার নূরুল আজিম রনি হত্যার দায় শিকার করে পোস্ট দিয়েছে গেরিলা শব্দের সাথে নাকি বিপ্লবীরা পরিচিত না। আমরা যখন গুপ্ত হামলা, গুপ্ত হত্যার জন্য পতিত লীগকে দায়ী করে সরকার ও প্রশাসনকে শক্ত ভূমিকা নিতে বললাম, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভালোই ব্যাশিং করলো। বললো সবকিছুতে লীগের ওপর দায় দিয়ে নাকি পার পাইতে চাচ্ছি। অথচ ২০০৬ থেকে লীগ চেনার কারণে বুঝি এদের একটা কুত্তার কাছেও আমরা নিরাপদ না। এরা নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিবির, ছাত্রদল সব সাজবে। দুইদিন পর নারায়ে তাকবির বা জিয়ার সৈনিক স্লোগান দিয়ে কোনো বিপ্লবী হত্যা হইতে দেখলেও অবাক হবো না। আরও করুন লীগের পুনর্বাসন, তাদের কোলে নিয়ে চুমু দিন।’