সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় ‘অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)’ জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে। আগামী সপ্তাহে সংস্থাটির সদর দপ্তর জেদ্দায় এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। আরব নিউজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এর পরেই সুইডেনের সরকার স্টকহোমের প্রধান মসজিদের বাইরে কুরআন পোড়ানোর নিন্দা করেছে।
সুইডেন সরকার এটিকে ‘ইসলামোফোবিক’ কাজ বলে অভিহিত করেছে। সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রবিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সুইডেনের সরকার পুরোপুরি বোঝে যে, সুইডেনে বিক্ষোভে কিছু মানুষের দ্বারা সংঘটিত ইসলামফোবিক কর্মকাণ্ড মুসলমানদের জন্য আক্রমণাত্মক হতে পারে।’ সুইডেন সরকার আরো জানায়, ‘আমরা এই কাজগুলোর তীব্র নিন্দা করি। যা কোনভাবেই সুইডিশ সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে না।
সৌদি ভিত্তিক ‘অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)’ থেকে ভবিষ্যতে কোরআন অবমাননা এড়াতে সম্মিলিত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ৫৭ সদস্যের সংস্থাটি বুধবারের ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে জেদ্দা সদর দপ্তরে মিলিত হয়েছিল। ওআইসির মুখপাত্র জানিয়েছেন, বৈঠকে কোরআন পোড়ানোর মতো ঘৃণ্য কাজের বিষয়ে সব মুসলিম দেশের ঐকমত্যের ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
এদিকে, ঈদের দিন সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
এ ঘটনাকে ‘আপত্তিকর, অসম্মানজনক ও উস্কানিমূলক কাজ’ বলেও অভিহিত করেছে ইইউ। ইউরোপের ২৭টি দেশ নিয়ে গঠিত সংগঠনটি শনিবার (১ জুলাই) এমন মন্তব্য করে বিবৃতি দিয়েছে। ইইউ’র পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক মুখপাত্র নাবিলা মাসরালি বিবৃতিতে বলেছেন, বর্ণবাদ, ধর্মীয় উসকানি ও অসহিষ্ণুতার স্থান ইউরোপে নেই। সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এ ধরনের হীন কাজ ইউরোপীয় ইউনিয়ন কোনোভাবেই সমর্থন করে না।
তিনি আরো বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক যে, মুসলিমদের গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপনের সময় এমন কাজ করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ জুন) সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের একটি মসজিদের সামনে সালওয়ান মোমিকা নামে এক ব্যক্তি পুলিশের নিরাপত্তায় মুসলমান পবিত্র গ্রন্থ কোরআনে একটি কপি পুড়িয়ে দেওয়ার পর ইউ’র পক্ষ থেকে এ মন্তব্য করা হয়। বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের পালিত প্রধান উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ঈদুল আযহা। আর এ উৎসব পালনের সময় এ ঘটনা ঘটে। মুসলিম বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। কোরআন পোড়ানোর ঘটনার প্রতিবাদে ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মরক্কোসহ দেশগুলো সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। সূত্র : আলজাজিরা