আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার বিশেষ কয়েকটি ব্যাংকের ‘সুইফট ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট সিস্টেম’ এ লেনদেন বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র জোট। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখায় শাস্তি হিসেবে মস্কোর বিরুদ্ধে শনিবার তারা এ উদ্যোগ নিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রজোট এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভে বিধিনিষেধ আরোপসহ আরও বেশ কিছু বিষয়ে আগামী দিনগুলোতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আগামীতে আরও শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেক করা হয়।
ইউরোপীয় কমিশন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ব্রিটেন, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে লিখেছেন, এ যুদ্ধের জন্য আমরা রাশিয়াকেই দায়ী করবো। আর এ যুদ্ধ যে পুতিনের জন্য কৌশলগত ভুল ছিল সেটা আমরা সমন্বিত ভাবে নিশ্চিত করবো।
তারা বলেন, এসব পদক্ষেপ নেওয়ার পরেও আমরা আজ ঘোষণা করছি যে, ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করতে আমরা আরও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার প্রতিবাদে এ সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট পুতিনসহ রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্ররাষ্ট্রগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর রাশিয়ার ব্যাংকের লেনদেনের ওপর নতুন এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।
ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েন বলেছেন, রাশিয়ান সেনারা যেহেতু কিয়েভসহ ইউক্রেনের অন্যান্য শহরে তাণ্ডব চালাচ্ছে, তাই আমরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ অব্যাহত রাখছি। এর ফলে রাশিয়া আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং আমাদের অর্থনীতি থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৬৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যাতে পুতিন ইউক্রেনের অভিযান চালাতে ব্যবহার করতে না পারেন সেটা নিশ্চিত করতেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিশ্বের অর্থনৈতিক লেনদেনের প্রধান নেটওয়ার্ক সুইফট থেকে রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংককে বিচ্ছিন্ন করা হলে, সেটা রাশিয়ার ব্যবসা বাণিজ্যের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। বিভিন্ন কোম্পানি তাদের ব্যবসা বাণিজ্য করতে আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন পুতিনের সরকারকে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থাপনা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
সুইফট বা সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফাইন্যানসিয়াল টেলিকমিউনিকেশন হচ্ছে মূলত একটি নিরাপদ মেসেজিং সিস্টেম। এর মাধ্যমে নিরাপদে এক দেশ থেকে আরেক দেশে আর্থিক লেনদেন করা যায়। প্রতি বছর এর মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার নিরাপদ এবং দ্রুত লেনদেন হওয়ায় এটি আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্যে প্রধান উপায় হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে।