জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ভুক্ত দেশগুলোর কোনো প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী, এমনকি মন্ত্রী পর্যায়ের কেউ বাংলাদেশ সফর করা থেকে বিরত থাকবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলোর ঢাকায় নিযুক্ত কূটনীতিকরা এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, অতি সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলোর ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত বা শীর্ষ কূটনীতিকরা বৈঠকে বসেছিলেন। ওই বৈঠক থেকেই এমন সিদ্ধান্ত এসেছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে কিংবা আগামী বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তা নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের বিষয়টি উঠে আসে। এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত একজন বিদেশি কূটনীতিক জানান, নির্বাচনের আগ মুহূর্তে বিদেশের কোনো হেভিওয়েট নেতা বাংলাদেশ সফর করলে তাতে যেনো সরকারি দলের নির্বাচনী ফায়দা হাসিলের সুযোগ তৈরি না হয়, এমন ভাবনা থেকেই এই সিদ্ধান্ত এসেছে। কারণ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলো মনে করে নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের সমান প্রচারণার সুযোগ থাকা উচিত।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২৭ দেশের ইউরোপীয় এই জোটের নানামুখী তৎপরতা নতুন নয়। চলতি বছরের শুরুতে মানবজমিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি জানিয়েছিলেন যে, ইইউ বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠাতে চায়। তিনি বলেছিলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই নির্বাচন ঘিরে আগ্রহ শুধু দেশের ভেতরেই নয়, সারা বিশ্বেই তৈরি হয়েছে।” এছাড়া, সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধার দুয়ার খুলতে পারে।
ওদিকে, ইইউ’র নির্বাচনপূর্ব পর্যবেক্ষক দল ১৩ দিনের মিশনে আগামী ৮ জুলাই ঢাকা আসছে।
এ সময় তারা রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনী পরিবেশ ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করবেন। উক্ত পর্যবেক্ষক দলের বাংলাদেশ সফরকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ উল্লেখ করে ইইউ ভুক্ত একাধিক দেশের ঢাকায় নিযুক্ত কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, তারা অধীর আগ্রহে এই সফরের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।