- আবারও আলোচনায় স্যাংশন।
- স্যাংশনে পড়তে পারেন যেসব সাংবাদিক।
বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার উদ্দেশ্যে গত ২৪মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই ভিসা নীতিতে উল্লেখ ছিল যে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সরাসরি বাধাগ্রস্ত করা বা এর সাথে জড়িত থাকা যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিল হয়ে যাবে। এই ঘোষণার প্রায় চার মাসের মাথায় গত ২২ সেপ্টেম্বর তাঁরা সেই ভিসানীতি কার্যকর করার পদক্ষেপ শুরুর ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করায় জড়িত ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের পরিবারের ওপরও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে পারে। এসব ব্যক্তির মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন দল ও ক্ষমতাসীনদের পক্ষের বিরোধী দলের সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের এই বিবৃতি প্রকাশের পর থেকেই নতুন করে আবারও স্যাংশন নিয়ে আলোচনা চলছে। সপ্তাহ না পেরোতেই স্যাংশন প্রাপ্তদের দু‘টি আংশিক তালিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
প্রথম তালিকায় রয়েছেন- সাবেক প্রধান বিচারপতি এ,বি,এম খায়রুল হক, মোজাম্মেলহক, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও হাসান ফয়েজ ছিদ্দিকী। এরপর রয়েছেন, বিচারক শামসুদ্দিন মানিক, এনায়েতুর রহিম ও মোঃ খসরুজ্জামান। রয়েছেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন ও নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব মোঃ হেলালুদ্দিন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, শাহাদাত হোসেন, আবু হাফিজ, আবদুল মোবারক, মোঃ জাভেদ আলী, মোঃ শাহনেওয়াজ, কাজী হাবিবুল আওয়াল, মোঃ আলমগীর, মোঃ আনিছুর রহমান, বেগম রাশেদা সুলতানা ও আহসান হাবিব খান। তালিকায় রয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়, সালমান এফ রহমান, আনিছুল হক, রওশন এরশাদ, কাজী ফিরোজ রশিদ, মশিউর রহমান রাংগা, ফখরুল ইমাম, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, মজিবুল হক চুন্নু, জেনারেল অবঃ তারেক সিদ্দিকী, মেজর জেনারেল যুবায়ের, মেজর জেনারেল হামিদুল হক, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানসহ সাবেক ও বর্তমান ২৫ জন সেনাঅফিসার।
দ্বিতীয় তালিকায় রয়েছেন- কবির বিন আনোয়ার, মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা, মোহাম্মদ শফিউল আলম, মোঃ নজিবুর রহমান, শেখ মো. ওয়াহিদ উজ জামান, মোঃ আবুল কালাম আজাদ, ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান, কামাল উদ্দিন তালুকদার, আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ফরিদউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, আবদুল মালেক, শাহ কামাল, অমিত কুমার বাউল, বিএম এনামুল হক, মোশাররফ হোসেইন, আনসার আলী খান, মহিবুল হক, মোস্তফা কামাল উদ্দীন, মাহবুব হোসেন (দুদক), ইব্রাহিম হোসেন (স্থানীয় সরকার), ডা. মোখলেসুর, সৈয়দ বেলাল হোসেন, ড. হারুন বিশ্বাস, হাবিবুর রহমান (পাওয়ার ডিভিশন), আবদুর রউফ তালুকদার, সাজ্জাদুল হাসান, আখতার হোসেন এসডিএস, জাহাঙ্গীর হোসেন, ওয়াহিদা আক্তার, সালমা মমতাজ, কাজী হাসান আহমেদ, মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত, আবুল কালাম আজাদ, শেখ আখতার হোসেন, হাবিবুর রহমান রংপুর কমিশনার, মো. জিল্লার রহমান, শেখ ইউসুফ হারুন, মোঃ নূরুল ইসলাম (ধর্ম), মেজবাহউদ্দিন (যুব), মোজাম্মেল হক খান (জনপ্রশাসন), ফয়েজ আহমদ (জনপ্রশাসন), কাজী নিশাত রসুল, রেজাউল, ইফতেখারুল ইসলাম খান, সুভাষ চন্দ্র, সেলিম রেজা, ওয়াহিদুল ইসলাম, আকরাম আল হোসেইন, মনোজ কান্তি বড়াল, মোঃ মাসুদ করিম, সাইফুল হাসান বাদল, জিএসএম জাফরউল্লাহ, মোঃ খলিলুর রহমান (ডাক), হাসানুজ্জামান কল্লোল, ইসমাইল হোসেন, হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (জননিরাপত্তা), আবদুল মান্নান, সোলেমান খান (শিক্ষা), খলিলুর রহমান (ভুমি), অমল কৃষ্ণ মন্ডল, মো. আবদুল হান্নান, ডা. মো. জহিরুল ইসলাম রোহেল, ফরিদ আহাম্মদ, পরিমল সিংহ, সাবিনা ইয়ামিন মালা, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, মাহমুদ বিন কাশেম, জসিম উদ্দিন হায়দার, মানজারুল মান্নান, মাসুম পাটোয়ারী, আবদুল মোক্তাদির, সত্যব্রত কর্মকার, ফিরোজ আহমেদ, আতিকুল হক, শফিকুর রেজা বিশ্বাস, মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, নাজমুল আহসান, সৈয়দ বেলাল হোসেন, শহীদুল আলম এনডিসি, খাজা মিয়া, আজাহারুল ইসলাম, আলী আজম, মইনউদ্দিন আবদুল্লাহ, রাব্বী মিয়া, ড. দেওয়ান মুহম্মদ হুমায়ুন কবির, মোঃ নূর-উর-রহমান, সায়লা ফারজানা, উম্মে সালমা তানজিয়া, মাজেদুর রহমান খান, মো. কামাল হোসেন, মো. আবুল ফজল মীর, মো. সায়োরার মোর্শেদ চৌধুরী, এস এম ফেরদৌস, সৈয়দা ফারহানা কাওনাইন, কাজী আবু তাহের, সরোজ কুমার নাথ, মো. আসলাম হোসেন, মোঃ আব্দুস সামাদ,, মো. আলী আকবর, আনারকলি মাহবুব, এ জেড এম নুরুল হক, মো. জসিম উদ্দিন, মোছা সুলতানা পারভীন, আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান, নাজিয়া শিরিন, মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার, মনির হোসাইন, মাহমুদুল কবির মুরাদ, মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক, মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, অঞ্জন চন্দ্র পাল, মো. হামিদুল হক, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ শফিউল আরিফ, ফয়েজ আহমদ, কবির মাহমুদ, আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন, হায়াত-উদ-দৌলা খান, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. আতাউল গনি, আঞ্জুমান আরা ও এম এমদাদুল ইসলাম।
এসব তালিকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা এবং হাজার হাজার শেয়ারও হলেও তালিকার সত্যতা যাচাইসহ নির্ভরযোগ্য কোনো উৎসের খোঁজ মিলছে না। এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, প্রশাসনের অতিরিক্ত সচিব পর্যায় পর্যন্ত এরকম অন্তত ১৪০ জন রয়েছেন যারা গ্রীন কার্ড ধারী অথবা যাদের সন্তান-সন্ততি বা পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সেখানে তাদের সম্পদও রয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম নর্থইস্ট ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে বাংলাদেশের ৪১৭ জনেরও বেশি রয়েছেন এ ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায়। কিন্তু তারাও এ বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করেনি। অন্যদিকে ডোনাল্ড লু’র এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন- বাংলাদেশের উপর আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির অধীনে যারা নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন তাদের নাম যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ করবে না। অর্থাৎ, বাংলাদেশের যাদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা শুরু হয়েছে তারা নিজে থেকে যদি নিশ্চিত না করেন, তাহলে বাইরের কারও পক্ষে এ সম্পর্কে জানা বা এর সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব না।
স্যাংশনে পড়তে পারেন যেসব সাংবাদিক
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন গণমাধ্যমও ভিসানীতির আওতায় আসবে। যদিও তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি বা কোনো সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের নাম উচ্চারণ করেননি। কিন্তু এই ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই স্যাংশনপ্রাপ্তদের তালিকার পাশাপাশি ভবিষ্যতে স্যাংশনে পড়তে পারেন যেসব সাংবাদিক সম্ভাব্য সেই নামের তালিকাও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। বিগত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার অবৈধ শাসনকে যারা বৈধ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের একতরফা ও ভোট ডাকাতির নির্বাচনের পক্ষে বয়ান দিচ্ছেন, বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে কথা না বলে হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, সরকারের মানবাধিকার লংঘনকে সমর্থন করছেন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে সরকারকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন, সেইসব সাংবাদিকরাই মূলত: এই তালিকায় ঠায় পেয়েছেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই পোস্ট করেছেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের এই তালিকায় রয়েছেন- জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শ্যামল দত্ত, সেক্রেটারি ফরিদা ইয়াসমিন, কালের কন্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ডেইলি সানের সাবেক সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, ডেইলি সানের বর্তমান সম্পাদক রেজাউল করিম লোটাস, খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, ডেইলি অবজারভারের চীফ রিপোর্টার মহসিনুল করিম লেবু, প্রতিদিনের বাংলাদেশের সম্পাদক মোস্তাফিজ সফি, চিফ রিপোর্টার আজিজুল পারভেজ, দৈনিক সময়ের আলোর সম্পাদক কমলেশ রায়, ইত্তেফাক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, ইত্তেফাকের সাংবাদিক ফরাজি আজমল ও আবুল খায়ের, আমাদের সময়ের মাসুদা ভাট্টি, দেশ রুপান্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, চিফ রিপোর্টার উম্মুল ওয়ারা সুইটি, একাত্তর টিভির মোজাম্মেল বাবু, দৈনিক ঢাকাটাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন, আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান, ডিবিসির মঞ্জুরুল ইসলাম ও জায়েদুল ইসলাম খান, ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, বার্তা২৪ডটকম এর সম্পাদক আলমগীর হোসেন, বাংলানিউজ সম্পাদক জুয়েল মাজহার, বাংলাট্রিবিউন সম্পাদক জুলফিকার রাসেল ও প্রকাশ কাজী আনিস আহমেদ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, আজকারের খবরের গোলাম মোস্তফা ও ফারুক আহমদ তালুকদার, কালবেলার প্রধান সম্পাদক আবেদ খান ও সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, জনকন্ঠের সম্পাদক শামীমা এ খান, বাংলাদেশ পোস্টের সম্পাদক শরীফ সাহাবুদ্দিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপ আজাদ, ক্রাব নেতা মিজান মালেক, নাঈমুল ইসলাম খান, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, মোল্লা জালাল, ওমর ফারুক চৌধুরী, জ ই মামুন, মুন্নি সাহা, ইশতিয়াক রেজা, মিথিলা ফারজানা, দীপক চৌধুরী, ফারজানা রুপা, নিজামূল হক বিপুল, মাহবুব হাসান ও নুরুল ইসলাম হাসিব প্রমূখ।