পশ্চিমবঙ্গ নিউজ ডেস্ক: নিয়োগ দুর্নীতির জেরে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হওয়ার পরই হাইকোর্টের তীব্র সমালোচনায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে হাইকোর্টের রায় তিনি মানবেন না। তার মতে এই রায় বেআইনি।
মমতা বলেছেন, ‘তারা কোর্ট কিনে নিয়েছে। আমি সুপ্রিম কোর্টের কথা বলছি না। সেখানে বিচারের আশায় আছি। এরা হাই কোর্ট কিনে নিয়েছে। এরা সিবিআই কিনে নিয়েছে। বিএসএফ কিনে নিয়েছে।’
তারপর মমতা জানিয়েছেন, তিনি বিচারপতিদের সম্পর্কে নয় বরং রায় নিয়ে কথা বলছেন।
জনসভায় মমতা বলেছেন, ‘একটা বিজেপির বিচারালয়। বিজেপি সেখানে বিচার করে। রাজনৈতিক বিচার। সেখানে অন্য কেউ আপিল করলে দেবে কিল, বিজেপি আপিল করলে বেল। এটা বিচারপতির দোষ নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের দোষ।’
মমতার বক্তব্য, ‘কী করবেন আমায়, সাজা দেবেন? মানহানি করবেন, জেলে পাঠাবেন? আমি তৈরি। মানুষের কথা বলার জন্য যদি শাস্তি দেয়, আমি মাথা পেতে নেব। কিন্তু পরিবার বিপদে পড়লে তার পাশ থেকে সরে দাঁড়াবো না।’
মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছন, তিনি এখনো বার কাউন্সিলের সদস্য। তিনিও আইনজীবী। চাইলে আদালতে সওয়াল করতে দাঁড়াতে পারেন।
তবে মমতা এটাও বলেছেন, ‘ভুল তো যে কেউ করতে পারেন। সব তো আর আমি করি না। কোনো দপ্তর চাকরি দিলে, সেটা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিষয়। আমি মাথা গলাই না। কিন্তু এক কথায় ২৬ হাজার চাকরি খেয়ে নিচ্ছে। এটা কী মজার মুলুক?’
ভারতে আদালতের বিরুদ্ধে রাজনীতিকদের সমালোচনা নতুন নয়। তবে লোকসভা ভোটের প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে হাইকোর্টকে নিশানা করেছেন, তাতে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এইভাবে হাইকোর্টকে আক্রমণ করার পর বিজেপি নেতা ও আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচী প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমকে চিঠি লিখে দাবি করেছেন, হাইকোর্ট যেন নিজে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করে। বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘গোটা ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী দায়ী। তিনি কোথায় পালাবেন?’
বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, তারা যোগ্য প্রার্থীদের আইনি সহায়তা দিতে তৈরি।