আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: গাজা উপত্যকার বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফায় সুড়ঙ্গ আছে বলে ইসরাইল যে দাবি করছে, সেটাকে ‘নির্জলা মিথ্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আল-বুরশ বলেন, আল-শিফা হাসপাতালে হামাসের সুড়ঙ্গ পাওয়ার ইসরাইলি দাবিটি ‘নির্জলা মিথ্যা’। ইসরাইল অব্যাহতভাবে হাসপাতালটিতে অভিযান পরিচালনা করতে থাকার প্রেক্ষাপটে তিনি এই মন্তব্য করলেন।
ইসরাইল এখনো গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে আজ সোমবার থেকে বন্দী মুক্তির বিনিময়ে গাজায় পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে যাচ্ছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা ইসরাইল এবং হামাস উভয় পক্ষই অস্বীকার করেছে। তবে কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে।
প্রাথমিক সমঝোতা অনুযায়ী, হামাস প্রায় ৫০ জন বন্দীকে মুক্তি দেবে। পাঁচ দিনে গ্রুপে গ্রুপে তাদের মুক্তি দেয়া হবে। এই পাঁচ দিন উভয় পক্ষই আক্রমণ থেকে পুরোপুরি বিরত থাকবে।
এদিকে ইসরাইলি সৈন্যরা গাজার প্রধান হাসপাতালে একের পর এক ভবনে তল্লাশি চালাচ্ছে।
হাসপাতালটিতে হামাসের কমান্ড সেন্টার রয়েছে এই দাবি তুলে বুধবার ইসরাইলি সৈন্যরা উত্তর গাজার আল-শিফা হাসপাতালে অভিযান শুরু করে।
হামাস এবং হাসপাতালের পরিচালকরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং সেখানে কয়েক হাজার মানুষের ভাগ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতালটিতে আহত রোগী এবং নবজাতকসহ অনেক রোগীর পাশাপাশি হাসপাতাল চত্বরে অনেক উদ্বাস্তু আশ্রয় নিয়েছে। ইসরাইলে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় হামাসকে নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসরাইল। এই হামলার জবাবে ইসরাইল বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল হামলা চালিয়ে গাজাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে।
গাজায় হামাস পরিচালিত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, ইসরাইলের বিমান হামলা ও বোমাবর্ষণ এবং স্থল অভিযানে হাজার হাজার শিশুসহ ১৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
এদিকে নেটওয়ার্ক প্রদানকারী প্যালটেল গ্রুপ বলেছে, গাজায় সমস্ত টেলিযোগাযোগ বন্ধ ছিল কারণ ‘নেটওয়ার্ক টিকিয়ে রাখার সমস্ত জ্বালানি উৎস শেষ হয়ে গেছে এবং জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি’।
জাতিসঙ্ঘ সতর্ক করেছে যে অন্ধকারাচ্ছন্ন বেসামরিক নাগরিকদের দুর্দশা বাড়িয়ে দেবে। সাহায্য বিতরণের প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলবে এবং সম্ভবত এর সরবরাহ লুটপাট শুরু করবে।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসঙ্ঘ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, ‘যখন ব্ল্যাকআউট থাকে তখন আপনি আর কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন না। যা উদ্বেগ ও আতঙ্ককে আরো বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে।’
ইসরাইল বলেছে, তার বাহিনী আল-শিফা হাসপাতালে একের পর এক ভবন তল্লাশি করছে এবং কাছাকাছি একটি ভবনে একজন নারী পণবন্দীর লাশ পাওয়ার কথা জানিয়েছে।