জাওয়াহির রোবেল। ইংল্যান্ডের প্রথম মুসলিম নারী রেফারি। এখনো দেশটির শীর্ষ ফুটবলে বাঁশি না বাজানো এই রেফারির স্বপ্নটা অনেক বড়। এজন্য তাকে পাড়ি দিতে হবে কঠিন পথ। জাওয়াহির রোবেল যে অবস্থানে রয়েছেন সেখানে আসতেও অবশ্য তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে নানা বাধা-বিপত্তি।
১০ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে সোমালিয়া থেকে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান জাওয়াহির। সোমালিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যখন ইংল্যান্ডে পা রাখেন তখন ইংরেজি জানতেন না তিনি। সেই সময়কার অভিজ্ঞতা বিবিসির সঙ্গে আলাপচারিতায় বলছিলেন ২৫ বছর বয়সী এই রেফারি, ‘আমি ইংরেজি জানতাম না। তবে ফুটবল আমাকে সহপাঠীদের কাছাকাছি এনেছিল।
আমি প্রাইমারি স্কুলে প্রতিদিন বল নিয়ে যেতাম এবং আমার বলটা ছিল অন্যদের চেয়ে উন্নতমানের। এজন্য আমার সঙ্গে খেলার জন্য মুখিয়ে থাকতো ছেলে এবং মেয়ে উভয়েই।’
প্রথম দিন রেফারি হিসেবে মাঠে নামার দিনের ঘটনা বর্ণনা করছিলেন জাওয়াহির, ‘আমি বাড়ি থেকে পুরো প্রস্তুত হয়ে মাঠে গিয়েছিলাম না। শুধু হিজাব পরা ছিল। ‘‘আমি আজকের ম্যাচের রেফারি। রেফারিজ রুমটা কোন দিকে?’’ এই কথাটা মাঠকর্মীকে বলতেই তার উত্তর ছিল, ‘‘আপনি সত্যিই আজকের ম্যাচ পরিচালনা করবেন?’’। প্রথমদিনের ওই ঘটনায় আমি চমকে গিয়েছিলাম।’
মেয়েদের ফুটবলের পাশাপাশি ছেলেদের অপেশাদার ফুটবলেও হিজাব পরে রেফারিং করেছেন। এজন্য শুনতে হয়েছে কটু কথাও। ছেলেদের একটি ম্যাচ চলাকালীন সময়ের ঘটনা জানালেন তিনি, ‘কিছু খেলোয়াড় আমাকে বলছিল, এটা ছেলেদের ম্যাচ। মেয়েদের এখানে বেমানান লাগছে। আমার উত্তর ছিল, শুধু ছেলেদের নয়। এই ম্যাচের সবচেয়ে বড় খেলোয়াড় একজন মেয়ে। যেভাবে ঘোড়ার মতো অযথা দৌড়াচ্ছ তাতে গোল মিস করবে। নিজের খেলায় মন দাও। তবে ম্যাচ শেষে স্বাভাবিকভাবেই তারা সেসব কথা বলার জন্য ক্ষমা চায়।’