বিশু / সমীপ, শিলচর (অসম): বরাকের বাঙালি সহ সমস্ত অউপজাতি যাঁরা গত ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে সরকারি জমিতে বসবাস করছেন তাঁদেরও ভূমি পাট্টা প্রদানের দাবিতে আজ সোমবার কাছাড় জেলার রাজস্ব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক ললিতা রংপিপির হাতে এক স্মারকপত্র তুলে দিয়েছে বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (বিডিএফ)।
এডিএফ-এর কর্মকর্তারা রাজস্ব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক রংপিপির সঙ্গে দেখা করে এই দাবি তুলে বলেন বিগত পাঁচ বছরে বিজেপি সরকার প্রায় ৫ লক্ষ মানুষকে পাট্টা দিয়েছে। বরাক উপত্যকায়ও কিছুদিন আগে ২,৪০০ জনকে পাট্টা দিয়েছেন মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য। তবে ভূমিপাট্টার প্রাপকরা সবাই আদিবাসী। তাঁরা বলেন, আদিবাসীদের পাট্টা দেওয়ায় বিডিএফ খুশি এবং সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানান তাঁরা। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, বাঙালি সহ যে অউপজাতিরা সরকারি জমিতে গত কুড়ি বছর ধরে বসবাস করছেন তাঁদেরও অবিলম্বে একই ভাবে পাট্টা দিতে হবে। এই দাবির ভিত্তিতে একটি স্মারকপত্র তাঁরা অতিরিক্ত জেলাশাসকের হাতে তুলে দেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক ললিতা রংপিপি সব শুনে নির্বাচনের পর ব্যাপারটি দেখবেন বলে তাঁদের আশ্বাস দেন।
অতিরিক্ত জেলাশাসকের দফতর থেকে বাইরে এসে বিডিএফ-এর মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, সরকার যদি উপজাতিদের পাট্টা দিতে পারে, তা-হলে রাজ্যের বাঙালি এবং অন্য অউপজাতিরা কী দোষ করেছেন? তিনি বলেন, প্রথমত এই পাঁচ লক্ষ পাট্টা থেকে জনসংখ্যার অনুপাতে বরাকের মানুষজনকে অন্তত ৩০/৩৫ হাজার পাট্টা পাওয়ার কথা, সেক্ষেত্রে ৬,০০০ পাট্টাও দেওয়া হয়নি। দ্বিতীয়ত প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজ্য বিজেপির সবাই ‘খিলঞ্জিয়া’ বা ভূমিপুত্রদের পাট্টা দেওয়ার কথা যে বার বার বলছেন বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কারণ কে এই রাজ্যের ‘খিলঞ্জিয়া’ সেই সংজ্ঞা এখনও নির্ধারণ করতে পারেনি এই সরকার। এ-সব ইচ্ছাকৃত ভাবে বাঙালি তথা রাজ্যের অন্যান্য অউপজাতিদের বঞ্চিত করার জন্য চক্রান্ত করা হচ্ছে।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক আরও বলেন, এখানকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এ-সব অবিচার চোখের সামনে দেখেও চুপ করে রয়েছেন। তাঁদের এই ভূমিকা ধিক্কারযোগ্য। তিনি বলেন, বিডিএফ বরাকের বাঙালি তথা অউপজাতিদের বিরুদ্ধে এ-ধরনের বৈষম্য ও অবিচার কখনও মেনে নেবে না এবং সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই ইস্যুতে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। স্মারকপত্র প্রদানের সময় অন্যান্যদের সঙ্গে এদিন উপস্থিত ছিলেন বিডিএফ-এর মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায়, আহ্বায়ক জহর তারণ, হৃষীকেশ দে, কল্পার্নব গুপ্ত, অমিতকান্তি চৌধুরী, সুমিত নাথ প্রমুখ।