এলাকায় ছোট ছোট শিশু থেকে মহিলা সবাই অঞ্চলের জমা জলের মধ্যে দিয়ে হাঁটছে। শৌচালয়ের চেম্বার ডুবে গিয়ে মলমূত্র সব একাকার।
শঙ্কু সন্ত্র: উমপুন পেরিয়ে গেছে ২৭ দিন আগে। তারপরে কলকাতা শহরে সবকিছু নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা প্রতিবাদ-প্রতিরোধের ঝড় বয়ে গেছে। আস্তে আস্তে ছন্দে ফিরেছে গ্রাম থেকে শহর। প্রদীপের তলায় যেরকম অন্ধকার থাকে। ঠিক তেমনই কলকাতা শহরতলীতেই সেই অন্ধকার দেখা গেল। মহেশতলা পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড শিবরামপুর রোডের ২৩ পল্লীর ,চক কেন্দুয়া এলাকা। এলাকায় ঢুকতেই দেখা গেল রাস্তা, বাড়ির উঠোন, এমনকি কোনও কোন ও বাড়ির ভিতরেও এখনও জল ঢুকে আছে। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অন্ততপক্ষে দেড় হাজার পরিবার জলের তলায়। জলে রীতিমতো শ্যাওলা কচুরিপানা জন্মে গেছে। তাকালে মনে হবে খাল আর পুকুর। না! ওগুলো রাস্তা ও মানুষের বাড়ির উঠোন। বিশ্বনাথ ধর দীর্ঘ ২২ বছর ধরে ওই এলাকায় বাড়ি করে আছেন। তার কথায়,বছরে চার মাস এই এলাকা জলের তলায় থাকে। বহুবার বহু দরবার করেও, কোনও লাভ হয়নি। স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে আরম্ভ করে সমস্ত নেতা প্রত্যেকেই শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন। জল রোদে শুকিয়ে যায়, কিন্তু কেউই নিকাশের ব্যবস্থা কোনদিনই করে দেয়নি।
ওখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে বেগোর খাল। সেখানে একটি নিকাশি করে জল ফেললেই, এলাকার জল কমে যায়। নেতারা স্বীকার করছেন জল জমে থাকে ওই এলাকাতে। কিন্তু কি করে মানুষগুলো মুক্তি পাবে? সেটার কথা কেউ বলছে না। এলাকায় ছোট ছোট শিশু থেকে মহিলা সবাই অঞ্চলের জমা জলের মধ্যে দিয়ে হাঁটছে। শৌচালয়ের চেম্বার ডুবে গিয়ে মলমূত্র সব একাকার। জলে পা দিলেই চামড়ার রোগের সম্ভাবনা প্রবল। তারপর মশা-মাছি বিষাক্ত পোকামাকড় সাপ সেগুলো তো আছেই।পানীয় জলের সংকট তো রয়েছেই। পরিস্থিতি নিয়ে মহেশতলা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত অ্যাডমিনিস্ট্রেটর দুলাল দাস এর সঙ্গে কথা বললে, তিনি ফোনে পরিষ্কার জানিয়ে দেন – ওই এলাকার জল এখনই কমানো সম্ভব নয়। ২৫ থেকে ৩০ বছরের সমস্যা হঠাৎ করে সমাধান সম্ভব নয়। তার দাবি, রাজ্যের পৌর মন্ত্রীও বিষয়টি জানেন। ফলে, আবার হয়তো ওই মানুষগুলো প্রতিশ্রুতি পাবেন। কিন্তু জল বোধহয় চারদিকে এই ভাবেই ঘিরে থাকবে। তবে দুলাল বাবু বলেন,কলকাতা পৌরসভার জল ওখানে এসে এই পরিস্থিতি করেছে। পৌর মন্ত্রী বিষয়টি দেখছে। দেখা যাক ভবিষ্যৎ কি হয়! নিউজ১৮