শিরোনাম
শুক্র. ডিসে ৫, ২০২৫

কীভাবে শুরু হয়েছিল জামাই ষষ্ঠী পালন? জানুন এই পার্বণের পৌরাণিক কাহিনী

পাটভাঙা নতুন পোশাক। গায়ে সুগন্ধি। হাতে মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে জামাই আপ্যায়ণের রীতির সঙ্গে বাঙালিরা ওতোপ্রোতোভাবে পরিচিত। আহা থালায় সাজানো রকমারি পদ। ইলিশ-চিংড়ি থেকে শুরু করে থরেথরে সাজানো সব সুস্বাদু খাবার। শেষপাতে মণ্ডা-মিঠাই কী নেই! ওদিকে শাশুড়ির ষষ্ঠী নিয়মও রয়েছে। তা এই যাঁদের জন্য এত আয়োজন, মানে জামাই, তাঁদের এই ষষ্ঠীপালনের রীতির সূত্রপাত কীভাবে হয়েছিল জানেন?

জামাইষষ্ঠী আদতে লোকায়ত প্রথা। ষষ্ঠীদেবীর পার্বণ থেকেই এই প্রথার সূচনা। সেই বৈদিক সমাজ থেকেই জামাইষষ্ঠী পালন করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের ষষ্ঠী তিথির প্রথম প্রহরে ষষ্ঠীদেবীর পুজোর আয়োজন করা হয়। ধর্মীয় বিশ্বাস, ষষ্ঠীদেবী আসলে মাতৃত্বের প্রতীক। তাঁর বাহন বিড়াল। মূলত সন্তানের কল্যাণ ও সংসারের সুখ-শান্তি নিশ্চিত করাই এই পুজোর উদ্দেশ্য। বঙ্গসমাজে ‘জামাইষষ্ঠী’ উত্‍সবের সামাজিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য। বিশেষ করে যে পরিবারে সদ্য বিবাহিতা কন্যা রয়েছে, সেই পরিবারে তো রীতিমতো ঘটা করে পালন করা হয় এই পার্বণ।

কিন্তু কীভাবে সূচনা এই আনন্দ-পার্বণের? লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে, এক গৃহবধূ স্বামীগৃহে নিজে মাছ চুরি করে খেয়ে দোষ দিয়েছিল বিড়ালের উপর। এরপর হঠাত্‍ই একদিন তার সন্তান হারিয়ে যায়। একে তার পাপের ফল মনে করে। তখন সে বনে গিয়ে ষষ্ঠীদেবীর আরাধনা শুরু করে। দেবী তুষ্ট হন। যার ফলে বনেই সে নিজের সন্তানকে ফিরে পায়। এই জন্যই ষষ্ঠীদেবীর অপর নাম অরণ্যষষ্ঠী। এদিকে মাছ চুরি করে খাওয়ার অপবাদে মেয়েটির শ্বশুর-শাশুড়ি তাঁর পিতৃগৃহে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এমতাবস্থায় মেয়েকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে তার মা-বাবা। একবার ষষ্ঠীপুজোর দিন মেয়ে-জামাইকে সাদরে নিমন্ত্রণ জানান তাঁরা। পুজোর দিনে সস্ত্রীক জামাই শশ্বরবাড়িতে উপস্থিত হলে আনন্দের বন্যা বয়ে যায় পরিবারে। আর সেই থেকেই ষষ্ঠীপুজো রূপান্তরিত হয় জামাইষষ্ঠীতে। যা সুদীর্ঘকাল ধরে পালন করে আসছেন বাঙালিরা।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *