ফের অশান্তি হয়ে উঠেছে আসাম। শিলচরে বাঙালিদের বিক্ষোভ চরমে উঠেছে। বাংলায় বিজ্ঞাপন দিতে হবে দাবি করে প্রতিবাদে সরব হয়েছে সেখানকার বাঙালিরা। আসামের অংশ হলেও শিলচর যেহেতু বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা সেকারণে সেখানে অসমিয়াদের থেকে বাঙালিদের সংখ্যা বেশি। বরাবরই শিলচর বাঙালি প্রভাবিত। যার কারণে সেখানে অসমিয়াদের সঙ্গে একটি বিবাদ বাঙালিদের বরাবরই রয়ে গিয়েছে। হঠাত্ করে শিলচরে বাঙালিদের এই বিক্ষোভের নেপথ্যে কোনও তৃতীয় শক্তি কাজ করছে বলে দাবি করেছে বিজেপি।
শিলচরে বিক্ষোভ বাঙালিদের
শুধু অসমিয়া ভাষায় সরকারি বিজ্ঞাপন চলবে না। সরাসরি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শিলচরের বাঙালি বাসিন্দারা। বাঙালি প্রভাবিত শিলচর এলাকায় বাংলায় বিজ্ঞাপন দিতে হবে। এমনই দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারি বিজ্ঞাপন জল জীবন মিশন অসমিয়া ভাষায় কেবল কেন লেখা হয়েছে তা নিয়ে প্রতিবাদ দেখাতে শুরু করে অল বেঙ্গলি স্টুডেন্ট ইউথ অরগানাইজেশন। এই নিয়ে বরাক ডেমোক্রেটিক ইউথ ফ্রন্টের প্রবল বিরোধ বাঁধে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে। দুই সংগঠন কালি দিয়ে কেন্দ্রীয়সরকারের সেই বিজ্ঞাপন মুছে দিচ্ছে। সেই পোস্টারে তাঁরা লিখেছে বাংলায় লিখুন।
অশান্তির নেপথ্যে তৃতীয় শক্তি
হঠাত্ করে শিলচরে এমন অশান্তি তৈরি হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অসমের শাসক দল বিজেপি। তাঁরা দাবি করেছে এর নেপথ্যে রয়েছে কোনও তৃতীয় শক্তি। তাঁরাই বাঙালি এবং অসমিয়াদের মধ্যে বিরোধ তৈরি করতে চাইছে। বিজেপির মুখপাত্র রামকৃষ্ণ ঘোষ দাবি করেছেন, অসমে বরাবরই বাঙালিদের সঙ্গে বন্ধুপূর্ণ সহাবস্থানেই থাকে অসমিয়ারা। সেখানে ইচ্ছা করে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে অশান্তি ছড়ানো হচ্ছে। অসমে শুধু অসমিয়া এবং বাঙালি নয় একাধিক ভাষাভাষির লোক বাস করেন। ব্রিটিশ আমল থেকেই ভেদাভেদের রাজনীতি চলছে। সেই রাজনীতিতে নতুন তরে শান দিতে শুরু করেছে তৃতীয় শক্তি। এই তৃতীয় শক্তি বলতে তৃতীয় ফ্রন্টের দিকে ইঙ্গিত করেছেন তিনি।
তৃণমূলের দিকে ইঙ্গিত
একুশের বিধানসভা ভোটের পর থেকেই উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিকে টার্গেট করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয় ফ্রন্টকে মজবুত করার ডাক দিয়েছেন। ত্রিপুরায় ইতিমধ্যেই সংগঠন শক্তিশালী করে ফেলেছে তৃণমূল। অসমের দুঁদে কংগ্রেস নেত্রী সুস্মিতা দেবকেও দলে টেনে নিয়েছেন তাঁরা। মেঘালয়ের দিকেও নজর দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ধাপে ধাপে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিতে নিজেদের সংগঠন বিস্তার করতে চাইছে তারা। এই কারণে বাঙালি সেন্টিমেন্টকে তৃণমূল কংগ্রেস কাজে লাগাতে পারে বলে মনে করছে বিজেপি।
বাঙালি-অসমিয়া বিরোধ
এনআরসি চালুর সময় থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে নিশানা করে বলেছিলেন আসাম থেরে বাঙালি খেদাও অভিযান শুরু করেছে বিজেপি। বাঙালিদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দিতেই এনআরসি চালু করেছে তারা। সেসময় তীব্র অশান্তি তৈরি হয়েছিল আসামে তার আঁচ এসে পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলাতেও। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা একুশের ভোটের পর অভিযোগ করেছিলেন বাংলা থেকে পালিয়ে আসছে বিজেপি কর্মীরা।